সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঘের বাসস্থান হিসেবে ভারত পৃথিবীর অন্যতম বড় সুরক্ষিত দেশ৷ সোমবার, বিশ্ব ব্যঘ্র দিবসে একেবারে তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরে এমনই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এদেশে বাঘের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান৷ যা এই মুহূর্তে প্রায় ৩ হাজারের কাছাকাছি৷ আর এখানেই বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, খুব বেশি সংখ্যায় বাড়তে থাকলে বাসস্থান এবং সামগ্রিক পরিবেশে ভালভাবে বেঁচে থাকতে সমস্যার সম্মুখীন হবে ব্যঘ্রকুল৷
[আরও পড়ুন: ট্রাকচালককে উলটো ঝুলিয়ে মার, গ্রেপ্তার শিব সেনা নেতা-সহ ২]
সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন জায়গায় বনাঞ্চল কমছে৷ নষ্ট হচ্ছে বন্যপ্রাণের আদর্শ পরিবেশ৷ তার উপর চোরাশিকারের সমস্যাও উত্তরোত্তর বাড়ছে৷ বিপন্ন হয়ে বন্যপ্রাণীরা জঙ্গল ছেড়ে চলে আসছে লোকালয়ের দিকে৷ আর সেখানে আতঙ্কের জেরে তাদের পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠছে সাধারণ নাগরিকের বিরুদ্ধে৷ লালগড়ের বাঘঘড়া জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, মহারাষ্ট্রের অবনি এবং সবচেয়ে সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের পিলভিটে বাঘিনী পিটিয়ে হত্যার ঘটনা উদ্বেগ আরও বাড়াচ্ছে বন্যপ্রাণপ্রেমীদের৷ এমনই যখন পরিস্থিতি, তখনই বিশ্ব ব্যঘ্র দিবসে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে জানালেন, ‘আমি মনে করি, এখানে উন্নয়ন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ হাত ধরাধরি করেই চলছে৷ এর মধ্যে একটা স্বাস্থ্যকর সামঞ্জস্য আছে৷ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পালটানোর সঙ্গে সঙ্গে সংরক্ষণ নীতিতেও বদল আনা দরকার৷’
২০০৬,২০১০ এবং ২০১৪ সালে, চার ভাগে ভাগ হয়ে ব্যঘ্রসুমারি চালানো হয়েছিল গোটা দেশজুড়ে৷ তাতেই দেখা গিয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০১৮-এই চার বছরে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে অন্তত ৩৮ শতাংশ৷ ২০১৮ সালে দেরাদুনের বন্যপ্রাণ গবেষণা কেন্দ্র একেবারে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে সুমারির কাজ করেছেন৷ বিভিন্ন ব্যঘ্র সংরক্ষণ বনাঞ্চলগুলিতে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসিয়ে গোনা হয়েছে বাঘের সংখ্যা৷ তাতেই দেখা গিয়েছে, বেড়েছে বাঘের সংখ্যা৷ শুধুমাত্র সুন্দরবনে ২০১৪ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল ৭৬, ২০১৮এ যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮৷ এনিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলছেন, ‘ভারতই বাঘের সবচেয়ে বড় এবং সুরক্ষিত বাসস্থান৷’
[আরও পড়ুন: লখনউয়ের মসজিদে জেহাদের পাঠ, জমি-বাড়ি বেঁচে অস্ত্র কেনার ডাক মুসলিমদের]
তবে বাঘের এই সংখ্যাবৃদ্ধিতে কিছুটা আশঙ্কায় বন্যপ্রাণ সংরক্ষকদের একাংশ৷ তাঁদের চিন্তা, যে হারে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে, অথচ সেই তুলনায় বনাঞ্চল অর্থাৎ থাকার জায়গার বিস্তার তো নেইই, বরং তা সংকুলান হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে বাঘের মতো একক প্রাণীর বেঁচে থাকা খুব একটা সুখকর নাও হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা৷ বিশ্ব ব্যঘ্র দিবসে এনিয়েই জনগণকে বার্তা দিয়েছেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়৷ একটি ভিডিও বার্তায় তাঁর জঙ্গলপ্রেম, ব্যঘ্রপ্রেমের কথা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, কঠিন সময় বাঘ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের বাঁচাতে সচেতন হতে হবে জনগণকে৷
The post বাঘের সংখ্যা বাড়লেও কমছে বাসস্থান, বিশ্ব ব্যঘ্র দিবসে আনন্দের চেয়ে উদ্বেগে বন্যপ্রাণপ্রেমীরা appeared first on Sangbad Pratidin.