ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যপালের মুখোমুখি হওয়া এড়াতে গান্ধী জয়ন্তীতে কর্মসূচি খানিকটা বদলে নিল তৃণমূল (TMC)। সোমবার সকাল সকাল মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে জাতির জনকের মূর্তিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন তৃণমূল নেতারা। ছিলেন দলের অন্যতম মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার, কাউন্সিলর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, সিনিয়র নেতা আশিস চক্রবর্তী, আলোক দাস। অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি থাকলেও তা হয়নি। মহাত্মা গান্ধীর (Mahatma Gandhi) মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর ফিরে যান তৃণমূল নেতারা। এরপর বেলা ১১টা নাগাদ মেয়ো রোডে পৌঁছন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C V Anand Bose)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। দুপুরে সেখানে বিজেপির তরফে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
রাজ্য-রাজভবনের মধ্যে লাগাতার সংঘাতের আবহে তৃণমূলের তরফে আগেই ঠিক হয়েছিল, গান্ধী জয়ন্তীতে মেয়ো রোডের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের মুখোমুখি হলেও ন্যূনতম কোনও ‘বার্তালাপের’ মধ্যেও যাবে না শাসকদল। দিন দুই আগেই এনিয়ে দলীয় নির্দেশিকা পৌঁছেছিল নেতাদের কাছে। এক রাজ্য নেতার কথায়, “রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও দলীয় নেতৃত্ব আমাদের নির্দেশ দিয়েছে, কোনওভাবেই তাঁর সঙ্গে আগ বাড়িয়ে কথা বলতে যাওয়া বা সৌজন্য দেখানোর প্রশ্ন নেই।” কিন্তু সেক্ষেত্রে রাজ্যপাল (Governor) সৌজন্য দেখিয়ে কথা বলতে চাইলে? “তখন পরিস্থিতি অনুযায়ী বিচার হবে। কিন্তু দলের কেউ নিজে থেকে রাজ্যপালের সঙ্গে কোনও বার্তালাপের মধ্যে নেই”, জানিয়েছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের ৪ দিন আগেই ধাক্কা ভারতের, দল ছেড়ে তড়িঘড়ি মুম্বই ফিরলেন বিরাট]
১০০ দিনের টাকার দাবিতে যেখানে এই দিন দিল্লিতে বড়সড় আন্দোলনে নেমেছে তৃণমূল নেতৃত্ব, রাজঘাটে পালিত ধরনা কর্মসূচি, সেখানে কলকাতাতেও গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভের কথা ছিল। কিন্তু সেই কর্মসূচি বদল করা হয়েছে।
রবিবার দলের তরফে এই অনুষ্ঠানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের কাছে আরেক দফা নির্দেশ পৌঁছয়। বলা হয়, কলকাতায় গান্ধী জয়ন্তীর সমস্ত অনুষ্ঠান যেন সকাল ১০টার মধ্যে সেরে ফেলা হয়। তাতে রাজ্যপালের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া কিংবা কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। কলকাতায় কোনও ঘটনার জন্য যাতে দিল্লিতে তৃণমূলের আন্দোলনের জোর বিন্দুমাত্র টাল না খায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাই এদিন সকাল গান্ধী মূর্তিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে ফিরলেন জয়প্রকাশ মজুমদার, আশিস চক্রবর্তী, আলোক দাস, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়রা।
[আরও পড়ুন: বানচাল বড়সড় নাশকতার ছক, রাজধানী থেকে দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ISIS জঙ্গি নেতা]
জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, “আজকের দিনের দুটো গুরুত্ব। প্রতি বছরের মতো এই দিনটায় এবারও গান্ধীজির জন্ম জয়ন্তীতে আমরা আলাদা করে অনুপ্রাণিত হই। আর দ্বিতীয়ত, তাঁর নামাঙ্কিত প্রকল্প ১০০ দিনের কাজে বাংলাকে বঞ্চনা করেছে কেন্দ্র। তার আন্দোলনের অধিকারও কেড়ে নিতে চাইছে। সেই কারণে আজকের দিনে দিল্লি গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মসূচি নিচ্ছেন।”