রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: তৃণমূল (TMC)ও বিজেপি (BJP) সমর্থকদের মধ্যে বচসায় জড়িয়ে পড়লেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, শুক্রবার রাতে জুনপুট মোড় এলাকায় দুই রাজনৈতিক দলের বাদানুবাদ চলাকালীন সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন সাংসদ। তিনি গাড়ি থেকে নেমে এই ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের লক্ষ্য করে সাংসদের দেহরক্ষীরা লাঠিচার্জ করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছন দিব্যেন্দু অধিকারী (Dibyendu Adhikari)।
এই ঘটনা ঘিরে শনিবার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় কাঁথিতে (Kanthi)। পরে কাঁথি শহরের জুনপুট মোড় সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয় কাঁথি থানার পুলিশ। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সাংসদকে হেনস্থা করার প্রতিরোধে তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা লাঠিচার্জ করে। তাতে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী আহত হন বলে পালটা দাবি ঘাসফুল শিবিরের। শুক্রবার রাতেই আহত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। এই ঘটনা নিয়ে শনিবারও দিনভর উত্তেজনা ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে।
[আরও পড়ুন: ‘বড়লোক’ মেয়ের সঙ্গে প্রেম! রেললাইনের ধারে উদ্ধার কিশোরের দেহ, খুনের অভিযোগ পরিবারের]
কাঁথি শহর তৃণমূল সভাপতি সুরজিত নায়কের অভিযোগ, ‘‘তমলুকের সাংসদ সব সময় সিআরপিএফ নিয়ে ঘোরাঘুরি করেন। সিআরপিএফ দিয়ে আমাদের ছেলেদেরকে আক্রামণ করেন। ভোটের আগে সিআরপিএফ দিয়ে কাঁথি শহরে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে৷” অপরদিকে, শনিবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন উপলক্ষে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি কাঁথিতে সভার আয়োজন করে। তার আগের রাতে কাঁথি শহরে লাগানো রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পোস্টার ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাজপোয়ীর পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই কাঁথি শহরে নতুন করে রাজনৈতিক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে তৃণমূল। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস যুক্ত নয়। বিজেপি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। শুভেন্দু অধিকারীকে আদি বিজেপিরা কোনও মতেই মেনে নিতে পারছেন না।”
[আরও পড়ুন: শিশুকন্যাকে অপহরণের চেষ্টায় গ্রেপ্তার ঝাড়গ্রামের শিক্ষক, পাচারচক্রের যোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ]
প্রসঙ্গত, দিব্যেন্দু অধিকারী তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল শিবিরের হয়ে উপনির্বাচনে জিতেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রভাব পড়ে তাঁর পরিবারের উপর। শুভেন্দু বাবা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী এবং তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও দলবদল করেন। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার কাঁথির রাজনৈতিক ঝামেলায় দিব্যেন্দু অধিকারীর জড়িয়ে পড়ায় বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে।