বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত ও ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতিকে কার্যত তুলোধোনা করল বাংলার শাসক ও বাকি বিরোধী দুই দল। তৃণমূল কটাক্ষ করে বিবৃতি দিয়েছে, মিথ্যের ঝুড়ি নিয়ে বাংলায় এসেছিলেন অমিত শাহ (Amit Shah)। দু’দিন সফরে নামে বাংলাকে বদনাম করেছেন তিনি। আবার ভোটের আগে ধর্ম ও জাতপাতের নামে মানুষকে ভাগ করতে চাইছে বলে তোপ দেগেছে বাম ও কংগ্রেস (Congress)। লকডাউনের জেরে যে অভুক্ত পরিবারের বাড়িতে যাওয়ার দাবি করেছে রাজ্যের এই দুই বিরোধী দলের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজ্য সফরের দিনই কলকাতায় কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনের প্রতিবাদে মিছিল করে কংগ্রেস।
তৃণমূলের (TMC) অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ভিত্তিহীন কথা বলেছেন শাহ। জয় শাহের বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট পদ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলার শাসক দল। তাঁদের আরও দাবি, এর আগে দিল্লি, বিহার, ছত্তিশগড়ে আসন পাওয়া নিয়ে শাহের দাবি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এবার বাংলার মানুষও তাঁকে ভুল প্রমাণ করবেন। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করে অমিত শাহ প্রতিহিংসার রাজনীতি করছেন বলেও সরব হয়েছে তৃণমূল।
[আরও পড়ুন : ‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়ে ভাববেন না, নিজেদের কাজ করুন’, রুদ্ধদ্বার বৈঠকে নির্দেশ অমিত শাহর]
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন মতুয়া বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজনে বসেছেন ঠিক তখনই কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের প্রতিবাদে শহরে ট্রাক্টর নিয়ে মিছিল করে কংগ্রেস। নেতৃত্ব দেন কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা অধীর চৌধুরি। মিছিল শেষে তাঁর অভিযোগ, “কৃষি আইনের ফলে শুধু কৃষকরাই বহুজাতিক কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে না। বাজারে চাল, ডাল, সবজির দাম হবে আকাশছোঁয়া।” অমিত শাহরা অন্যের বাড়িতে না খেয়ে নিজেরা বাজারে গেলেই বুঝতে পারবেন দেশের মানুষের কী অবস্থা বলে কটাক্ষ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির। ভোটের আগে ধর্মীয় মেরুকরণ করতেই শাহরা বারবার রাজ্যে আসবেন বলে অভিযোগ তাঁর।
এ রাজ্যের মানুষ বিজেপি ও তৃণমূলের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি মেনে নেবে না বলে দাবি করেন সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরকারি অর্থে দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছেন। যা এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করে থাকেন। লকডাউনের সময় রাস্তায় যেসব পরিযায়ী শ্রমিক রাস্তায় আটকে পরেছিলেন। দিনের পর দিন অভুক্ত অবস্থায় ছিল বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতিকে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন সিপিএম পলিটব্যুরোর এই সদস্য।
[আরও পড়ুন : ‘৩৫৬ ধারা জারির দরকার নেই, সরকারই বদল হবে’, বঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন নিয়ে জবাব অমিত শাহর]
কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজে্যর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন অধীর। তাঁর অভিযোগ, বাংলার অর্থনীতির মেরুদন্ড সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গিয়েছে। সাধারণ মানুষ চরম বিপদে পড়েছে। রাজ্যে বেকারদের দুর্বিষহ পরিস্থিতি। বাংলার যুবকদের ভবিষ্যত তৃণমূল সরকার মদ ও লটারির প্রতি আসক্তি বাড়িয়ে নষ্ট করছে। প্রদেশ সভাপতির দাবি, পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় মেরুকরণের বাইরে কংগ্রেস ও বাম জোট আগামীদিনে বিকল্প শক্তি হয়ে উঠবে এবং তৃণমূলের অপশাসন থেকে রাজ্যকে মুক্ত করবে।