ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: তৃতীয় বিকল্প নয়, কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে গদিচ্যুত করতে জোট বিকল্পই কার্যকর করতে হবে। তবে হুটহাট কোনও সিদ্ধান্ত নয়, তার জন্য প্রয়োজন সঠিক ফর্মুলার। শনিবার দলের মুখপত্র জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে এ নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করা হল তৃণমূলের তরফে। যেখানে কংগ্রেসের কিছু সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেও বিজেপিকে (BJP) সরাতে যে জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের হাত ধরতে আগ্রহী রাজ্যের শাসক দল, তা নিয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে রাখল।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) দিল্লি সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর আরও জোড়াল হয়ে ওঠে জাতীয় স্তরে জোটের সমীকরণ। এদিনের সম্পাদকীয়তে সেই বার্তাই যেন আরও স্পষ্ট হল। তবে তৃণমূল খুব ভালই জানে, বিজেপিকে আসনচ্যুত করতে হলে শুধু ঐক্যবদ্ধ হওয়াই যথেষ্ট নয়। জোটকারিগরির প্রযুক্তি বদলে ভিত মজবুত করারও অত্যন্ত জরুরি। এদিন তাই লেখা হয়, “আমরা দেশের স্বার্থে অ-বিজেপি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির ঐক্যের পক্ষে। আমরা ঐক্য চাই বলেই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) বাড়ি গিয়ে বৈঠক করেছিলেন। রাহুল গান্ধীও ছিলেন সেখানে। সংসদের ভিতরে-বাইরে আমাদের বিজেপি বিরোধী ভূমিকা প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু আমরা চাই একটা নির্দিষ্ট নীতি বা পদ্ধতিতে ঐক্য হোক। আজ হঠাৎ মনে হল, একটা ফোনে বলে দিলাম আমরা মিছিল করছি, চলে আসুন, এটা তৃণমূলের ক্ষেত্রে চলবে না।”
[আরও পড়ুন: Independence Day 2021: দুয়ারে রেশন থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ট্যাবলোয় সেজে উঠছে Red Road]
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে (WB Polls 2021) জোট ছাড়া একাই বিজেপিকে পর্যুদস্ত করেছে তৃণমূল। তাই জাতীয় স্তরে জোটের পথে হাঁটলেও তৃণমূলের ভূমিকা ও গুরুত্ব বাকি দলগুলিকে মনে রাখতে হবে। একথা উল্লেখ করেই কংগ্রেসের অতীত ভুলের কথা তুলে ধরেছে তৃণমূল। নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেই রাজ্যে সিপিএমের সঙ্গে জোট বেঁধেও কংগ্রেসের নিট ফল শূন্য। এমনকী নিজেদের ভুলেই অন্য রাজ্যেও ক্ষমতা বিস্তারে সফল হয়নি কংগ্রেস। তবে বিজেপিকে সরাতে কংগ্রেসের হাত ধরার প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখেই তাই তৃণমূলের দাবি, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েই ভুল শুধরে দিতে হবে। জোটের কারিগরি প্রযুক্তি বদলে জোটের ভিত মজবুত করা দরকার। জোট-রসায়নের আগের ফাঁকফোকড় ভরাট করেই লড়াইয়ের ময়দানে নামতে হবে।
অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যে একক শক্তিতে বিজেপিকে ধরাশায়ী করলেও জাতীয় স্তরে ঐক্যের নেতৃত্ব নিয়ে ভাবছে না তৃণমূল। বরং বিজেপির জনবিরোধী নীতিগুলোর অবসান ঘটানোই অগ্রাধিকার পাবে।