ধীমান রায়, কাটোয়া: এবার পূর্ব বর্ধমানের গলসি ২ নম্বর ব্লকের সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া বিরোধীদের। কংগ্রেসের প্রধান এবং কংগ্রেসের এক সদস্য দলত্যাগ করে যোগ দিলেন তৃণমূলে। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন,” সাঁকো পঞ্চায়েতের প্রধান এবং ওই পঞ্চায়েত সদস্য আমাদের দলের কাছে আবেদন করেছিলেন যে তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল হতে চান। ওই আবেদন আমাদের দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মঞ্জুর করেছেন। তার পর আমরা দুজনকে দলে সামিল করেছি।” বস্তুতপক্ষে এদিন দুজন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের ফলে সাঁকো পঞ্চায়েত হাতছাড়া হল বিরোধীদের।
বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে গলসি ২ নম্বর ব্লকের সাঁকো পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছিল বিরোধী জোট। জানা গিয়েছে, এই পঞ্চায়েতে মোট আসন সংখ্যা ১৩ টি। তার মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস ৬ টি আসনে জয়লাভ করেছিল। বাকি সাতটির মধ্যে বিজেপির দখলে যায় ৪ টি আসন। কংগ্রেস, ফরোয়ার্ড ব্লক এবং সিপিএম একটি করে আসনে জয়লাভ করে। এর পর শাসকদলকে চাপে রাখতে বিরোধীরা একজোট হয়ে পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করে। প্রধানের পদে দায়িত্ব পান ফরোয়ার্ড ব্লকের সদস্যা শিখা সাঁতরা। গত সোমবার শিখা সাঁতরা এবং কংগ্রেসের সদস্য মহম্মদ সাহেদুল্লাহ গলসি ২ ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে জানান, তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করতে ইচ্ছুক। তৃণমূল নেতৃত্ব সেই আবেদন মঞ্জুর করার পর এদিন রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে ওই দুজন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। যদিও এই যোগদানের বিষয়ে বিরোধীদের অভিযোগ, ভয় দেখিয়ে প্রধান সহ ওই দুজনকে দলত্যাগ করিয়েছে শাসকদল।
[আরও পডুন: আরএসএস নেতা খুনে পপুলার ফ্রন্টের ১৫ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিল কেরলের আদালত]
এই অভিযোগ উড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যদি ওদের ভয় দেখানো হয়ে থাকে তাহলে তো ওরা আগেই পুলিশকে জানাতেন। এসব মিথ্যা অভিযোগ। একজন ভোটে লড়েন জেতার পর মানুষের হয়ে কাজ করার জন্য। কিন্তু তাঁরা কাজ করতে পারছিলেন না বলেই আমাদের সঙ্গে সামিল হয়েছেন। সাঁকো পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিজেপির সুনীল মাণ্ডি বলেন, “ওই বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে এবং অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে আলোচনা করা হবে। তার পর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।” ফরোয়ার্ড ব্লকের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্যা মাধবী দাস বলেন, “সাঁকো পঞ্চায়েতের প্রধান আমাদের দলের ওই পঞ্চায়েত সদস্যা নিজের ইচ্ছায় দলত্যাগ করেছেন। এটা তার নিজস্ব ব্যাপার। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে করেননি। তবে তার যেটা ভালো লেগেছে করেছেন। আমাদের দল থেমে থাকবে না। দল নিজস্ব আদর্শ অনুযায়ী চলবে।” সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, “বিষয়টি আমার কিছু জানা নেই। তাছাড়া যারা দলবদল করেছেন তারা আমাদের দলের কেউ নন। তাই মন্তব্য করব না।”