সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের নিয়ে একের পর এক মন্তব্য বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে শাসকদলের। এই প্রেক্ষাপটে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কড়া বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তৃণমূল সেনাপতির সাফ কথা, 'চিকিৎসক তথা সুশীল সমাজের বিরুদ্ধে কোনও কুমন্তব্য নয়। প্রতিবাদ করার অধিকার সকলের রয়েছে।'
সোমবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ লেখেন, 'জনপ্রতিনিধিদের আরও নম্র এবং সমব্যাথি হতে হবে। তৃণমূল কংগ্রসের সকল সদস্যদের কাছে আমার আবেদন, স্বাস্থ্যকর্মী এবং নাগরিক সমাজের কারও প্রতি কোনও কুমন্তব্য করবেন না। প্রতিবাদ করার অধিকার সকলের আছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোর সঙ্গে আমাদের তফাৎ এখানেই। আমরা বুলডোজার মডেল ও রাজনৈতিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করি। এখন সময় এই ধরনের নৃশংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তার জন্য গঠনমূলক পদক্ষেপ করার। এই লড়াইয়ে বাংলাকে একসঙ্গে লড়তে হবে। যতক্ষণ না ধর্ষণবিরোধী আইন আনে কেন্দ্র ও রাজ্য ততক্ষণ আমাদের এক হয়ে লড়ে যেতে হবে।'
Public representatives across party lines need to be more HUMBLE and SYMPATHETIC. I urge everyone in @AITCofficial not to speak ill of anyone from the MEDICAL FRATERNITY OR CIVIL SOCIETY. Everyone has the right to protest and express themselves— This is what sets West Bengal…
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) September 2, 2024
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার এবং প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা। সেই তালিকায় রয়েছেন অশোকনগরের তৃণমূল নেতা অতীশ সরকার, উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকও। অশোকনগরের কচুয়া মোড় এলাকায় আর জি কর কাণ্ড নিয়ে তৃণমূলের প্রতিবাদ সভায় হুমকি সুরে অতীশ সরকারকে বলতে শোনা যায়, “যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সবসময় কুরুচিকর মন্তব্য করছেন তাঁদের বাড়ির মা-বোনদের ছবি বিকৃত করে বাড়ির দরজায় টাঙিয়ে দিয়ে আসব।” তাঁর এই বেফাঁস মন্তব্যে শোরগোল পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। একবছরের জন্য অতীশ সরকারকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল।
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ঘটনার পরদিন থেকেই লাগাতার আন্দোলন, কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এখনও হাসপাতালের আউটডোরে কাজে যোগ দেননি তাঁরা। একাধিকবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের কাজে ফেরার আর্জি জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁদের কাজে ফেরার কথা বলেছেন। তবে সমস্ত দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে অনড় জুনিয়র চিকিৎসকরা। যা নিয়ে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে কাঞ্চন মল্লিক বলেন, "অনেক সরকারি কর্মচারি কর্মবিরতিতে রয়েছেন। তারা সরকারের থেকে বেতন নিচ্ছেন তো নাকি? বোনাস নেবেন তো, না সেটা প্রত্যাহার করবেন?" তাঁর এই মন্তব্যেও নিন্দার ঝড় ওঠে। অস্বস্তি বাড়ে শাসকদলের অন্দরে। এই ধরনের মন্তব্য থেকে যাতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিরত থাকেন এবার তারই নির্দেশ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করা হচ্ছে।