দিব্যেন্দু মজুমদার: পরনে ফতুয়া এবং লুঙ্গি। মোটা গোঁফ। ওজনও নেহাত কম নয়। সামনে বটি নিয়ে এক পা ছড়িয়ে বসে রয়েছেন। আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মাছ। সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হওয়া ছবি দেখে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছেন, ইনিই কী অনুব্রত মণ্ডল? বর্তমান বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি একসময় মাছ বিক্রি করতেন। তাই ক্রমশ বাড়ছে কৌতূহল।
নিজের চাঁচাছোলা মন্তব্য করে প্রায় সবসময়ই শিরোনামে জায়গা করে নিতেন অনুব্রত মণ্ডল। তাই তাঁকে নিয়ে আলোচনা লেগেই থাকত। গ্রেপ্তারি এবং দিল্লিযাত্রার পর থেকে অনুব্রতই যেন ‘টক অফ দ্য টাউন’। তবে ওই মাছ ব্যবসায়ীকে যাঁরা অনুব্রত ভাবছেন, তাঁরা সম্পূর্ণ ভুল করছেন। কারণ, ইনি সুকুমার হালদার। গত ৩০ বছর ধরে হুগলির শেওড়াফুলি মাছ বাজারে ব্যবসা করেন। পায়ের সমস্যায় ভুগছেন। তাই নিজের দু’টি বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। নিমাইতীর্থ ঘাট এলাকায় স্ত্রীর সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
[আরও পড়ুন: ‘লিখতে পারি না স্যর’, ইডি হেফাজতে স্বীকারোক্তি অনুব্রতর, বয়ান লেখাতে গিয়ে ‘বিপাকে’ অফিসাররা]
ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর থেকে বিরক্ত মাছ ব্যবসায়ী। বহু ক্রেতাই নাকি তাঁকে অনুব্রতর সঙ্গে মিল রয়েছে বলে বিরক্ত করছেন, দাবি সুকুমারবাবুর। তাঁর কথায়, “অনুব্রতর কাছে আমি তুচ্ছ। পিঁপড়ের মতো।” কে বা কারা তাঁর ছবি ভাইরাল করে দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়, সে বিষয়টি তাঁর অজানা। অনুব্রত মণ্ডলের অপরাধ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির দাবিও জানান সুকুমার।
স্বামীকে অনুব্রত মণ্ডল বলে অনেকে ভুল করছেন, তা মানতেই নারাজ মাছ ব্যবসায়ীর স্ত্রী। রীতিমতো ফুঁসে উঠে বলেন, “গরু পাচারকারী, শয়তান, অপরাধীর সঙ্গে আমার স্বামীর তুলনা করবেন না। ওঁকে কখনই অনুব্রত মণ্ডলের মতো দেখতে নয়। ৩০ বছর ধরে এই বাজারে মাছ বিক্রি করেন। যে অনুব্রতর সঙ্গে আমার স্বামীর তুলনা করে তার মুখে ঝাঁটা মারি।” অনুব্রতকে ‘শয়তান, অপরাধী’ বলে কটাক্ষ করলেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সুকুমারের স্ত্রী। তিনি বলেন, “দিদির দেওয়া ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর টাকায় আমাদের সংসার চলছে।”