বিক্রম রায়, কোচবিহার: এ যেন ধনুকভাঙা পণ! প্রতিজ্ঞা করেছিলেন নিশীথ প্রামাণিককে হারাতে না পারলে মাছ ছোঁবেন না। করেছিলেনও তা। মুখে তোলেননি মাছ। অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল পেয়েছেন। ঘাসফুলের দাপটের কাছে কোচবিহারে ম্লান পদ্ম। জয়ী তৃণমূল প্রার্থী জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। তাঁকে সংবর্ধনা দিয়ে মৎস্যমুখ করলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁকে মাছ খাইয়ে দেন উদয়ন গুহ।
গত ১০ মার্চ, ব্রিগেডের জনসমাবেশ থেকে প্রার্থী ঘোষণা করে তৃণমূল। কোচবিহারে এবার প্রার্থী করা হয় জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়াকে। গতবারের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, উত্তরে সেভাবে দাঁত ফোঁটাতে পারেনি তৃণমূল। তবে এবার উত্তরের জমিতে পদ্মকে হঠিয়ে ঘাসফুল ফোটানোই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষত নিশীথ গড় বলে পরিচিত কোচবিহারে ঘাসফুল ফোটানোর বিশেষ দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন সেখানকার বর্ষীয়ান নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর কোচবিহারের বিখ্যাত মদনমোহন মন্দিরে দাঁড়িয়ে নিশীথকে হারানোর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। যত দিন না পর্যন্ত নিশীথ হারছেন, ততদিন মাছ ছোঁবেন না বলেই শপথ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। দীর্ঘ দেড়মাস মাছ খাওয়া তো দূর অস্ত, ছুঁয়ে নাকি দেখেননি তিনি।
[আরও পড়ুন: স্পিকার নির্বাচনে বিজেপিকেই সমর্থনের ইঙ্গিত নীতীশ-চন্দ্রবাবুর! ডেপুটি স্পিকার পদ চায় INDIA]
এবার কোচবিহারের ভোটে অশান্তি হয়নি। মোটের উপর শান্তিপূর্ণভাবেই গণতন্ত্রের উৎসবে শামিল হন জেলাবাসী। গত ৪ জুলাই ভোটের ফলপ্রকাশ হয়। বাংলার সবুজ ঝড়ের কাছে ফিকে হয়ে গিয়েছে পদ্মশিবির। গতবারের তুলনায় কমেছে আসন। গতবার ১৮টি আসন নিজেদের দখলে রেখেছিল গেরুয়া শিবির। এবার মোটে ১২। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, উত্তরেও যে গেরুয়া শিবিরের আধিপত্য খানিক কমেছে বিজেপির, তা নাকি ফলাফল থেকে বেশ স্পষ্ট। হেরে যান নিশীথ প্রামাণিক। রবিবার জেলা তৃণমূলের বর্ধিত কমিটির বৈঠকে জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়াকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই পণ ভেঙে মৎস্যমুখ করেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁকে মৎস্যমুখ করান উদয়ন গুহ। পোলাও, কাতলা মাছ এবং মাংস খান তিনি।