নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: যা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, বাস্তবে সেটাই ঘটল। একটা সময় রেল-সহ বিমান পরিবহণ, সড়ক, জাহাজ ও সংস্কৃতি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটির শীর্ষপদে আসীন ছিল সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস। এরপর একে একে সব ক’টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকেই অপসারিত হয়েছেন তৃণমূল (TMC) সাংসদরা। একমাত্র টিকে ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee)। খাদ্য এবং গণবণ্টন সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার রাতের রদবদলে সেটাও হাতছাড়া হল তৃণমূলের। নয়া কমিটিতে সুদীপ জায়গা পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু চেয়ারপার্সন হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন বিজেপির (BJP) সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। টুইটে তঁার কটাক্ষ, ‘সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম দল তৃণমূল কংগ্রেস। দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলও বটে। কিন্তু একটি কমিটির চেয়ারম্যান পদও দেওয়া হল না! পাশাপাশি, বৃহত্তম বিরোধী দল দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানের পদ হারিয়েছে। এটাই নতুন ভারতের নির্মম বাস্তবতা।’
[আরও পড়ুন:দশেরায় শোকের ছায়া উত্তরাখণ্ডে, বিয়েবাড়ির বাস খাদে পড়ে মৃত ২৫]
উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্র এবং তথ্যপ্রযুক্তির মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান পদ ছিল কংগ্রেসের হাতে। সেগুলি থেকে তাদের অপসারিত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন উত্তরপ্রদেশ থেকে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ ব্রিজলাল। কমিটিতে রয়েছেন ডেরেক, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। সান্ত্বনা পুরস্কার হিসাবে কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে। এমনকী, পরিবহণ, পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন ওয়াইএসআর কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ভি বিজয়সাই রেড্ডি। যারা সংসদের ভিতরে-বাইরে বিজেপির ‘বন্ধু’ হিসেবেই পরিচিত। অথচ সাংসদ সংখ্যার বিচারে তারা তৃণমূলের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে।
ঘটনা হল, অধিকাংশ সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মাথায় বসানো হয়েছে বিজেপি সাংসদদের। প্রসঙ্গত, সংসদে মোট ২৪টি স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে। তার মধ্যে ১৬টির সভাপতি হন লোকসভার সাংসদরা। বাকি ৮টির দায়িত্বে থাকেন রাজ্যসভার সদস্যরা। লোকসভার স্পিকার এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ঠিক করেন, কে কোন কমিটির চেয়ারম্যান হবেন। কিন্তু বিরোধী সাংসদদের চেয়ারম্যান করার প্রথা লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠেছে নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে।
[আরও পড়ুন: শাহর সফরের মধ্যেই গুলির লড়াই কাশ্মীরে, সোপিয়ানে নিকেশ ৩ জইশ জঙ্গি-সহ ৪ জেহাদি]
খাদ্য এবং গণবণ্টন সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিতে সুদীপ ছাড়াও রয়েছেন ফারুক আবদুল্লা, বাংলার সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরি। শিক্ষা, মহিলা, শিশু, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে রয়েছেন সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, তৃণমূলের সুস্মিতা দেব। এই কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন বিহার থেকে নির্বাচিত বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ বিবেক ঠাকুর। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের রাজ্যসভার স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আছেন ডা. শান্তনু সেন প্রমুখ। রেলমন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন লোকসভার সাংসদ রাধামোহন সিং।