চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: সরকারি কর্মসূচিতে গিয়ে জনরোষের মুখে পড়লেন তৃণমূলের (TMC) এক উপপ্রধান। গ্রামবাসীদের প্রশ্নে জর্জ্জরিত ওই নেতা কার্যত হাতজোড় করে গ্রাম থেকে পালিয়ে যান। জামুড়িয়ার (Jamuria) চুরুলিয়া গ্রামের এই ঘটনার ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
উপপ্রধানকে কাছে পেয়ে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। প্রশ্ন তুলেছেন, চাকরি না করেও কীভাবে ৪০ লক্ষ টাকার সম্পত্তির মালিক হলেন ওই উপপ্রধান। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত উপপ্রধানের সাফাই, “বিজেপির লোকজন এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
[আরও পড়ুন : ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন, ‘তৃণমূলের ভয়ে সিদ্ধান্ত বদল’, তোপ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের]
চুরুলিয়া গ্রামের হরিমন্দিরে ভোটার লিস্ট সংশোধনীর কাজ চলাকালীম মারমুখী এক গ্রামবাসী উপপ্রধান প্রদীপ মুখোপাধ্যায় উপর চড়াও হন। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন রুইদাস অভিযোগ করেন, “গ্রামে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। কিন্তু উপপ্রধানের ৪০ লক্ষ টাকার বাড়ি হয়েছে।কুড়ি-তিরিশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি হয়েছে।” প্রশ্ন তোলেন, “এতটাকা কোথা থেকে এল?” এরপর প্রকাশ্যেই উপপ্রধানকে গালিগালাজ শুরু করেন তিনি। হাতের টর্চ নিয়ে রীতিমতো মারমুখী হয়ে ওঠেন। ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, স্বপন রুইদাসকে থামাতে কেউ এগিয়ে আসেননি। শেষ পর্যন্ত হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে পালিয়ে যান উপপ্রধান। তারপরেই হাততালির আওয়াজ ওঠে।
চুরুলিয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রদীপ মুখোপাধ্যায় ভিডিওটির সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দিন দুয়েক আগে নির্মল বাংলা প্রকল্প নিয়ে চুরুলিয়ার দক্ষিণ রুইদাস পাড়ায় গিয়েছিলাম। শৌচাগার তৈরি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সেই সময় স্বপন রুইদাস নামে এক গ্রামবাসী ভিত্তিহীন কথা বলতে শুরু করেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এমনকী, সাম্প্রদায়িক অশান্তি পাকাতে উসকানিমূলক মন্তব্যও করেন।” তিনি আরও জানান, “আমার মনে হয় ওই ব্যক্তি স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না। তাই পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে রুইদাস পাড়া থেকে চলে আসি।”
[আরও পড়ুন : ‘দুয়ারে সরকারে’র পালটা, এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে শাসকদলের ‘দুর্নীতি’ তুলে ধরবে বিজেপি]
উপপ্রধানের আরও অভিযোগ, “ওই ব্যক্তি (স্বপন রুইদাস) আগে সিপিএম করত। এখন বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। আমাদের হেনস্তা করতে পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়। গোপনে ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়।” জামুড়িয়ার বিজেপি নেতা রানা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “চুরুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও উন্নয়নমূলক কাজই হয়নি। রাস্তাঘাট, আলো কিছুই নেই। তাই এলাকার মানুষ ক্ষোভপ্রকাশ করছেন। প্রতিবাদ করতে গেলেই বিজেপি বলে তকমা এঁটে দেওয়া হচ্ছে।”
দেখুন ভিডিও: