ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কেন্দ্রের সরকারী দলের নানা কৌশল। রাজ্যে দশকের ঘর পর্যন্ত আসন ছিনিয়ে নিতে চায় তারা। তৃণমূলের টার্গেট বর্তমান আসন সংখ্যা ধরে রেখে সেই সংখ্যা বিয়াল্লিশে পৌঁছনো। কিন্তু প্রকৃত ফলাফল কী হবে! প্রবল স্নায়ুযুদ্ধে কাটতে চলেছে বিনিদ্র রাত। সেই রাত পেরিয়ে গণনাকেন্দ্রের বাইরে আগামীকাল, বৃহস্পতিবার, অতন্দ্র পাহারায় বসতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। গণনাকেন্দ্রের বাইরে রাজ্যের প্রায় সর্বত্র গোটা কতক স্ক্রিন বসেছে। সকাল ৮টা থেকেই সক্রিয় হওয়ার কথা সেগুলো। বিধায়ক, মন্ত্রী, জেলার সভাপতি, এমনকী, বড়মাপের সব নেতার ‘ডিউটি’ গণনাকেন্দ্রের পরিধিতেই। নিজস্ব কেন্দ্রে থাকবেন প্রার্থীরাও। মিনিটে মিনিটে আপডেট, দ্রুত রাউন্ডের হিসাব মিলিয়ে দিনভর চলবে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা। কোথাও গণনায় কোথা ভুল বা গরমিলের আঁচ করতে পারলে প্রবল প্রতিবাদ। কারণ ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ আগেই জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন: ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তায় শহরে আগামিকাল ভোটগণনা, বাড়তি সতর্কতা লালবাজারে]
নিজেদের স্বার্থে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে কেন্দ্রের সরকার পারে না এমন কোনও কাজ নেই বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলনেত্রী। তার পর আর কোনও সুযোগ ছাড়া যাবে না। একেবারে দফায় দফায় দল ভাগ হয়ে গিয়েছে। স্পর্শকাতর জায়গায় পাঠানো হয়েছে দলের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের। সঙ্গে তথ্যে ফাঁকি ধরতে রয়েছে পর্যাপ্ত ব্যাকআপ। লড়াইটা বোধহয় এখন স্টারওয়ারের চেয়েও কঠিন। আগের রাতে বেশি মাথা খাটিয়ে ঘুম নষ্ট করতে চান না অনেকেই। কিন্তু আশঙ্কা না করলেও উদ্বেগ রাতভর জাগিয়ে রাখতে পারে বলে জানাচ্ছেন সিংহভাগ। গণনাকেন্দ্রের বাইরে বিকেলেই রাত কাটানোর ক্যাম্প বানানো হয়ে গিয়েছে উত্তর থেকে দক্ষিণ, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। সেইসব ক্যাম্প থেকে প্রতি মুহূর্তে খবর যাবে জেলা পার্টি অফিসে। সেখান থেকে কমিউনিকেট করা হবে রাজ্য পার্টি অফিস তৃণমূল ভবনে। যার তত্ত্বাবধানে থাকবেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। এমনই আরও কিছু দলীয় ‘স্ট্রংরুম’ তৈরি থাকছে। যাদের সঙ্গে সরাসরি যোগ থাকবে কালীঘাটে দলনেত্রীর অফিসে। সূত্রে খবর, দলনেত্রীর কড়া নির্দেশ, গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিজের এলাকা ছেড়ে কেউ বেরতে পারবেন না।
উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষ নেতা জানালেন, “ফল ভাল হোক বা খারাপ, রেজাল্টের আগের রাতে কি আর নিশ্চিন্তে ঘুমোনো যায়?” আসন দখলের হিসাব কি তবে ভুল হয়ে গেল তৃণমূলের? “একেবারেই না”। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক গণনাকেন্দ্রের খবর নিতে নিতে বলছিলেন এক শীর্ষ নেতা। তাঁর কথায়, “ষড়যন্ত্র হোক, মানুষকে ভয় দেখিয়ে হোক, সিপিএমের থেকে পুষ্টি নিয়ে অন্তঃসলিলার মতো হোক, প্রতিপক্ষ গেরুয়া শিবির সুকৌশলে মানুষের রায়কে বিকৃত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাকেই আটকাতে সবরকমভাবে প্রস্তুতি নেওয়া।” গেরুয়া শিবির যে প্রবলভাবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে, এটা একবাক্যে স্বীকার করে নিচ্ছেন প্রত্যেকে। আজ সকাল থেকে প্রত্যেকের নজর গণনার দিকে। কিন্তু এতটাই বা উৎকণ্ঠা কেন? যদিও একে স্রেফ প্রস্তুতি বলে শুধরে দিতে চেয়েছেন সেই নেতা।
[আরও পড়ুন: আসমীক্ষা দেখেই ‘এক্সিট’! তৃণমূলের পার্টি অফিস বদলে গেল দরজির দোকানে]
The post ইভিএম কারচুপি রুখতে তৎপর তৃণমূল, গণনাকেন্দ্রে কড়া নজরদারির নির্দেশ নেত্রীর appeared first on Sangbad Pratidin.