ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: লক্ষ্য চব্বিশের লোকসভা ভোট। তার আগে উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) ও পাঞ্জাবের (Punjab) মতো দুই রাজ্যের বিধানসভা ভোট ফেব্রুয়ারিতে। লোকসভা ভোটের জমি তৈরির জন্য সামনের বিধানসভা ভোটে এই দুই কৃষিপ্রধান রাজ্যে সলতে পাকানো শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। সব ঠিক থাকলে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনেও লড়তে চলেছে তৃণমূল। তবে এককভাবে নয়, অখিলেশ যাদবের দলের সঙ্গে সদর্থক আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলে সে রাজ্যে চারটি আসনে প্রার্থী দিতে পারে বাংলার শাসক দল।
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উত্তরবঙ্গ সফরকালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এআইসিসির প্রাক্তন সভাপতি কমলাপতি ত্রিপাঠীর পৌত্র রাজেশ ত্রিপাঠী (Rajesh Tripathi) ও তাঁর পুত্র ললিতেশপতি ত্রিপাঠী। আলোচনা ফলপ্রসূ হলে ললিতেশ তাঁর পুরনো কেন্দ্র মিরজাপুরের মারিহান থেকে লড়বেন। অখিলেশের সঙ্গে আলোচনা খুব বেশি এগোয়নি বলে জানিয়েছেন সে রাজ্যে তৃণমূলের সভাপতি নীরজ রাই। তবে শেষ পর্যন্ত সদর্থক সাড়া মিললে ললিতেশের সঙ্গে আরও তিনটি আসনে রফা হতে পারে বলে জানাচ্ছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
[আরও পড়ুন: ৭০০ কৃষকের প্রাণহানি! কৃষি আইন দেরিতে প্রত্যাহার নিয়ে মোদিকে খোঁচা বরুণ গান্ধীর]
সরাসরি এ নিয়ে কিছু না জানালেও দলের বর্ষীয়ান সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy) বলেছেন, “আমরা এখন দলের সংগঠন বিস্তারের কাজ করছি উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, গোয়ার মতো রাজ্যগুলিতে। সব ঠিকঠাকভাবে এগোলে, সবরকম রাজনৈতিক সমীকরণ মিললে কিছু আসনে লড়াই হতেই পারে। তবে মাথায় রাখতে হবে, আমাদের লক্ষ্য চব্বিশের লোকসভা ভোট।” মারিহান ছাড়া বারাণসী লাগোয়া একটি আসন, মথুরা জেলার বাঙালি অধ্যূষিত কোনও আসন এবং এলাহাবাদ বা কানপুরের বাঙালি অধ্যুষিত কোনও একটি আসন নিয়ে চূড়ান্ত রফা হতে পারে। তৃণমূলকে এখানে বিশেষভাবে ভাবাচ্ছে লখনউয়ের বাঙালিদের কথাও। একটি তথ্য বলছে, সাড়ে পাঁচ লক্ষ বাঙালির বাস সেখানে।
এই পর্বেই সামনে এসেছে ললিতেশপতির বাবা রাজেশ ত্রিপাঠীকে নিয়ে কিছু সমীকরণও। উত্তরপ্রদেশে এখন যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সে রাজ্য থেকে দলের হয়ে বক্তব্য সংসদে পৌঁছে দেওয়ার ভাবনা আরও দৃঢ় করতে চাইছে তৃণমূল। সেক্ষেত্রে লোকসভা ভোটে তো বটেই, দরকার হলে তার আগেই রাজ্যসভায় রাজেশকে পাঠানোর সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত করতে পারে তৃণমূল। এই মুহূর্তে রাজ্যসভায় তৃণমূলের কোনও আসন খালি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে রাজেশ ত্রিপাঠীকে দলের প্রতিনিধি করে দিল্লিতে পাঠানোর ভাবনা চূড়ান্ত করে ফেললে কোনও আসন নিয়ে ভাবনা-চিন্তা দল করতেই পারে। শীর্ষ নেতৃত্বের একটি শিবির অন্তত তেমনই মনে করছে।
[আরও পড়ুন: কৃষি আইনে পিছু হটলেন মোদি-শাহ, এবার কি ৩৭০ ধারা-CAA? শুরু গুঞ্জন]
উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গোয়া ও মণিপুরে ভোট ফেব্রুয়ারি মাসে। পাঞ্জাব থেকে কোনও প্রতিনিধি রাজ্যসভায় পাঠানো যায় কিনা, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। এর মধ্যে গোয়া থেকে লুইজিনহো ফেলেইরোকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে তৃণমূল। পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রয়োজনমতো পাঞ্জাবের ভূমিপুত্র কোনও নামজাদা ব্যক্তিকে রাজ্যসভায় পাঠানো হতে পারে।