অর্ণব দাস, বারাসত: 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পে সরকারি টাকা থেকে কেউ সুবিধা নিতে চাইলে সোজা 'দিদিকে বলো'-তে অভিযোগ জানান। কারও চাপে বা হুমকিতে কোনও ইমারত সামগ্রী কিনবেন না। সরকারি টাকা সুবিধাভোগীদের অধিকার। সেই টাকার ভাগ কেউ চাইলে কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। কাটমানি ও সিন্ডিকেট-রাজ নিয়ে জনগণকে সতর্ক করতে গিয়ে ফের বিতর্ক বাড়ালেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে 'বাংলার বাড়ি'র টাকা দেওয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। ১৬ ডিসেম্বর থেকে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হচ্ছে। আগে সরকারি প্রকল্পের টাকায় 'কাটমানি' নেওয়ার অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজ্য। তাতে অভিযুক্ত হিসেবে উঠেছে তৃণমূলেরই বহু নেতা-কর্মী। একইসঙ্গে বাড়ি তৈরির সময় সিন্ডিকেটের চাপ থাকে বলেও সরব হয়েছেন অনেকে। এবার সেসব কারচুপি এড়াতে 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পের টাকা সরাসরি সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়া দু নম্বর ব্লকের প্রায় ৩ হাজার ৯০০ জন এই প্রকল্পের অনুমোদন পেয়েছে।
আর তা নিয়েই সতর্ক করলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। শনিবার গুমার নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের মাঠের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, "গুড়, চিনি, মিষ্টি যেখানে থাকে, সেখানে এসে পিঁপড়েরা হাজির হয়। সেই রকমই বাংলার বাড়ির টাকা ঢুকলে কেউ কেউ আপনাদের কাছে বলতে পারে, সে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছি বলেই কাজটা হয়েছে। এই বলে যদি কেউ সুবিধা চায়, কারোর কথা শুনবেন না। সরাসরি 'দিদিকে বলো'তে ফোন করে জানিয়ে দেবেন। তারপরও যদি কেউ হুমকি দেয়, সোজা থানায় চলে যাবেন। আমাকেও ফোন করতে পারেন।"
এরপর প্রকাশ্য মঞ্চে নিজের ফোন নম্বর দিয়ে তাঁর সংযোজন, "মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো গরিব মানুষের টাকা তাদের অধিকার। এর থেকে কেউ যেন এক কাপ চাও না খায়।" সিন্ডিকেট রাজ নিয়েও এদিন হুঁশিয়ারি শোনা যায় নারায়ণের মুখে। বলেন, "কোন ভাটা থেকে ইট নেবেন, কোন গোলা থেকে বালি-পাথর- সিমেন্ট নেবেন, আপনারা ঠিক করবেন। পাড়ার কেউ বলল হয়ত, অমুক দোকান থেকে নাও, ওই ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করাও। এই মাতব্বরি করার অধিকার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কাউকে দেননি। নিজের বাড়ি, নিজে দাঁড়িয়ে থেকে করাবেন।"