বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: দলীয় কর্মীদের নিয়ে বুথ সম্মেলনে কোন্দলের মাঝে পড়ে মেজাজ হারালেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ তথা নদিয়া জেলা তৃণমূল (TMC) সভানেত্রী মহুয়া মৈত্র (Mohua Moitra)। কর্মীদের উদ্দেশে আপত্তিকর ভাষা প্রয়োগ করতে দেখা গেল তাঁকে। দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে সাংবাদিকদেরও গালিগালাজ করেন তিনি। রবিবার এ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠল নদিয়ার গয়েশপুর। শেষমেশ পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে ঘিরে বুথ সম্মেলনে পৌঁছে দেন। পরবর্তীতে অবশ্য মহুয়া মৈত্র সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, খুব ভাল বৈঠক হয়েছে।
নদিয়ায় (Nadia) তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে প্রতি মাসে জেলার সমস্ত বুথকর্মীদের নিয়ে একেক জায়গায় সম্মেলন করেন মহুয়া মৈত্র। রবিবার গয়েশপুরের কর্মীদের নিয়ে সুকান্ত সদনে ছিলে সেই সম্মেলন। সেখানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন মহুয়া মৈত্র। কিন্তু তার আগেই তিনি দলীয় কর্মীদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বিক্ষোভের সূত্রপাত গয়েশপুরে দলের নতুন সভাপতিকে নিয়ে। সম্প্রতি এই পদে রদবদল আনা হয়েছে। দলের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, গয়েশপুরে দলের নতুন সভাপতি সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় স্থানীয় বাসিন্দা নন। তিনি কল্যাণীর বাসিন্দা। তাই কেন একজন ‘বহিরাগত’কে সভাপতি পদে বসানো হল, সেই প্রশ্ন তুলে জেলা সভানেত্রী তথা সাংসদকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে গাড়ি থেকে নামতেই পারেননি মহুয়া মৈত্র। পরে সুকান্ত সদনের সামনে গিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সাংসদকে এসকর্ট করে নিয়ে যাওয়া হয় ভিতরে।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলার কৃষককে ভুল বুঝিয়ে লাভ নেই, তাঁরা মোদিজির সঙ্গেই আছেন’, তৃণমূলকে কটাক্ষ লকেটের]
এসবের জেরেই মেজাজ হারান মহুয়া মৈত্র। রীতিমতো রণমূর্তি ধারণ করে আপত্তিকর ভাষায় বকাবকি করতে থাকেন দলের কর্মীদের। বৈঠক শুরু হতেই অনেকটা দেরি হয়। পরে অবশ্য তিনি শান্ত হন। গুরুত্ব দিয়ে দলীয় বৈঠক করেন। সকলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। এরপর বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনেই কথা বলেন। তাঁর কথায়, ”একটা গণতান্ত্রিক দলে আলোচনার জায়গা থাকে, বিক্ষোভেরও জায়গা থাকে। সেটা ভাল। কারও কোনও বিষয়ে আপত্তি থাকতেই পারে। তা নিয়ে তিনি কখনও রেগে গিয়ে মেজাজ হারাতেই পারেন। পরে আবার সব ঠিক হয়ে যায়। আমাদের বৈঠক খুব ভাল হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ত্রাতা মন্ত্রী! মুর্শিদাবাদের মৃত আদিবাসী যুবকের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য জাকির হোসেনের]
যে বিষয়টি নিয়ে দলের কর্মীদের মধ্যে এত ক্ষোভ, গয়েশপুরে দলের দায়িত্বে কেন একজন ‘বহিরাগত’? – এই প্রশ্নের উত্তরে মহুয়া মৈত্র স্পষ্ট বলেন, ”এসব আমার বলার বা দেখার বিষয় নয়। এ নিয়ে আমার কোনও সমস্যাও নেই। দল সভাপতি নির্বাচন করেছে, আমি তাঁকে নিয়েই কাজ করব। আমার মূল লক্ষ্য, বুথস্তরে সংগঠন আরও জোরাল করা, সেই কাজই করছি। অন্য কিছু নিয়ে ভাবি না।”