ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: শুধু পঞ্চায়েত ভোট নয়, তৃণমূলের পাখির চোখ ২০২৪’র লোকসভা নির্বাচন। তা কার্যত স্পষ্ট তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যকলাপে, কথাবার্তায়। স্পষ্ট হয়ে গেল, ‘তৃণমূলের ভিশন ২০২৪’ (Trinamool Congress Vision 2024)। ১৫টি সামাজিক প্রকল্পের উপর নির্ভর করেই ভোটের বৈতরণী পার করতে চাইছে তৃণমূল।
দলকে দুর্নীতিমুক্ত করা থেকে সংগঠনে গোছানোয় জোর, উঠে এল তাঁর বক্তব্যে। ২০২৩ সালের শুরুতেই ২০২৪ সালেরও ক্যালেন্ডার প্রকাশ করে দিলেন তিনি। যা পৌঁছে যাবে রাজ্যবাসীর ঘরে-ঘরে। সেখানে লেখা রয়েছে রাজ্য সরকারের ৬টি ক্ষেত্রের ১৫টি প্রকল্পের কথা। অর্থাৎ শুধু পঞ্চায়েত ভোট নয়, লোকসভা নির্বাচনের আগেও রাজ্যবাসীর ঘরে ঘরে হাজির থাকবে রাজ্যের সামাজিক প্রকল্পের খতিয়ান।
[আরও পড়ুন: ‘দিদিকে বলো’র পর ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’, পঞ্চায়েত ভোটের আগে নয়া কর্মসূচি তৃণমূলের]
সোমবার নজরুল মঞ্চে দলীয় কর্মীদের সম্মেলনের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। সেখানো গোটা অনুষ্ঠান দেখে রাজনৈতিক মহলের মত, তৃণমূল এখন অনেকটাই কর্পোরেট। এদিনের অনুষ্ঠানে ছিল সেই কর্পোরেট ধাঁচের ছোয়া। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যে কায়দায় ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি বোঝালেন, হাতেকলমে তা তুলে ধরলেন, তা একেবারেই কর্পোরেট সুলভ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: মোদির নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত আইনত বৈধ, রায় সুপ্রিম কোর্টের]
দল যে দুর্নীতিকে প্রশয় দেবে না, তা তো আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন অভিষেক। এদিন দলীয় কর্মীদের দলের কাজের জন্য রীতিমতো রুটিন বেঁধে দিলেন মমতার যোগ্য সেনাপতি। বললেন, “চাকরি করুন। তারপর দিনে ২ ঘণ্টা সময় দিন দলকে।” একইসঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন পরিস্থিতি যাই হোক মাথা গরম করা চলবে না। তৃণমূল কর্মী হতে হলে ধৈর্য থাকতে হবে অপরিসীম। অভিষেকের কথায়,”আরও বিনম্র, বিনয়ী হতে হবে। ধৈর্য রাখতে হবে অপরিসীম।” রাজনৈতিক মহলের কথায়, শুধু পঞ্চায়েত ভোট নয়, লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই দলকে তৈরি করছেন তিনি।
২০২৪ সালে লোকসভা ভোট। গত লোকসভায় বাংলায় বিজেপি ১৯টি আসন দখল করে। যার পিছনে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দুর্ব্যবহার, উন্নাসিকতা ও অহংকারকেই দায়ী করেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আর যাতে সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি না হয় এদিন সেটাই আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন অভিষেক।