সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আদানি 'ঘুষকাণ্ড' নিয়ে মঙ্গলবার সকালে ফের উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ। কংগ্রেস-সহ ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য শরিক দল এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিলেও, নিজেদের নীতি আগেই স্পষ্ট করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেইমতো মঙ্গলবার কংগ্রেসের ডাকা এই বিক্ষোভ এড়িয়ে গেল ঘাসফুল শিবির। তৃণমূলের পাশাপাশি এই বিক্ষোভে যোগ দিতে দেখা যায়নি সমাজবাদী পার্টির কোনও সাংসদকেও।
শুধুমাত্র একটি ইস্যুকে হাতিয়ার করে তৃণমূল যে সংসদ অচল করে রাখার পক্ষে নয় সে কথা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল তৃণমূল। এই বিষয়ে রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, শুধু আদানি আদানি করে সংসদ অচল করে রাখলে বিজেপিরই সুবিধা। সংসদ অচল হলে মানুষের সমস্যা তুলে ধরার জায়গা পাওয়া যায় না। তাছাড়া শুধু একটা দুর্নীতির ইস্যু তুলে জনমানসে প্রভাব ফেলা যাবে না। তাই সংসদ অধিবেশনে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, বাংলার বঞ্চনা, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলার পাওনা টাকা আটকে রাখা, সার-সংকট, মণিপুরে হিংসা-সহ উত্তর-পূর্বের সমস্যার কথা তুলে ধরতে চায় তৃণমূল।
যদিও শুরু থেকেই আদানি ইস্যুকে অস্ত্র করে মাঠে নেমেছে কংগ্রেস। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অধিবেশন শুরু হওয়ার পর আদানি ইস্যুতে আলোচনার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে কংগ্রেস। তাদের সঙ্গ দেয় ইন্ডিয়া জোটের আরও কিছু শরিকদল। এই প্রতিবাদ কর্মসূচির একদম সামনের সারিতে ছিলেন রাহুল গান্ধী। হাত শিবিরের বক্তব্য, অন্য সব কাজ ফেলে আদানি ইস্যুতে আলোচনা করতে হবে। বিক্ষোভের জেরে দুপুর দুটো পর্যন্ত মুলতুবি করে দেওয়া হয় সংসদের দুই কক্ষ। কংগ্রেসের ডাকা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি এড়িয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, "আমাদের দল সংসদে সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলি তুলে ধরবে। আমরা সংসদ অচল করার পক্ষে নই। অন্যান্য একাধিক বিষয়ে সরকারের ব্যর্থতার জবাব চাই আমরা। সেটাও সংসদ সচল রেখেই।" অন্যদিকে সপা সাংসদ জিয়ায়ুর রহমান জানান, ''আদানির চেয়েও বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্ভলে ভয়াবহ হিংসার ঘটনা। সে সব ফেলে সংসদে আদানি আদানি করার কোনও মানে হয় না। তাই আমাদের নেতা অখিলেশ যাদব কংগ্রেসের এই কর্মসূচির পক্ষে নন।''
যদিও এই ঘটনায় জাতীয় রাজনীতিতে অন্য অঙ্ক কষতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহল। সাম্প্রতিক হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলিতে কংগ্রেসের বিরাট ব্যর্থতার পর বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে। বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেস যে ব্যর্থ দল তা ক্রমশ প্রমাণিত সত্য হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় ইন্ডিয়া জোটের শরিক হলেও সেখানে কংগ্রেসের আধিপত্য মানতে নারাজ বহু শরিক। এই তালিকায় তৃণমূলের পাশাপাশি রয়েছে সমাজবাদী পার্টি ও আম আদমি পার্টির মতো দলগুলি। এখানে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মুখ হিসেবে সামনের সারিতে উঠে আসছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই আপের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে একাই লড়বে তারা। তৃণমূলের বার্তা, ইন্ডিয়া জোটের অংশ হলেও কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের কোনও নির্বাচনী সমঝোতা নেই। ফলে তাঁদের ডাকা কর্মসূচিতে যেতেই হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।