কৃষ্ণকুমার দাস: বয়সের হিসাবে ২৪ পূর্ণ হয়ে ২৫-শে পা দিল। জন্মদিনের সংখ্যাতত্ত্বে ২৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস। আজ, ১ জানুয়ারি, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দলের প্রতিষ্ঠা দিবসকে সামনে রেখেই রবিবার সারাদিন বাংলার পাশাপাশি ত্রিপুরা, অসম, গোয়া, মেঘালয় ও দিল্লিতে দলীয় পতাকা উত্তোলনের সঙ্গে তৃণমূলের অজস্র সামাজিক এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে। দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে দলের সর্বস্তরের কর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২ জানুয়ারি, সোমবার নজরুল মঞ্চে দলের সাংসদ, বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তৃণমূলনেত্রী। থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আজ দুপুরেই তপসিয়ায় দলের সদর দফতরের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।
জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তৈরি দল ১৯৯৮ সালের এই দিনে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) থেকে প্রতীক নিয়ে রাজনৈতিক রণভূমিতে যাত্রা শুরু করেছিল। অবশ্য তার আগে ১৯৯৭ সাল জুড়েই তৈরি হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস তৈরির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। কারণ, তৎকালীন রাজ্য যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) চাইছিলেন বাম অপশাসনের অবসান ঘটাতে সর্বাত্মক সংগ্রাম। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব সেই পথে হাটেনি। স্বভাবতই বাংলার সাধারণ মানুষের দাবিকে অগ্রাধিকার দিয়ে চলা মমতার সঙ্গে প্রদেশ নেতৃত্বের নীতির লড়াই চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। যার পরিণতিতে ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি জন্ম নেয় তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। বস্তুত সেই দলের নেতৃত্বেই রাজ্য সরকারে পরিবর্তন এবং টানা তিন তিনবার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেছেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক জনপরিষেবামূলক নানা প্রকল্প চালু করে একাধিকবার দেশের সেরার সম্মান যেমন পেয়েছেন তৃণমূল (TMC) নেত্রী তেমনই কন্যাশ্রী এনে দিয়েছে বিশ্বসেরার সম্মানও।
[আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক! গয়া পুরনিগমে ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত সাফাইকর্মী চিন্তা দেবী]
রক্তদান, শীতবস্ত্র বিতরণ, হাসপাতালে রোগীদের ফল বিতরণের মতো অজস্র সামাজিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে দলের তরফে। অংশ নিচ্ছে ছাত্র, যুব, মহিলা, শ্রমিক, জয় হিন্দ, ফেডারেশন থেকে শুরু করে সমস্ত শাখা সংগঠনের কর্মীরা। বহু এলাকায় মধ্যরাত থেকেই নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি দলের জন্মদিন পালনের কর্মসূচি শুরু হয়ে গিয়েছে। পাহাড় থেকে সাগর, জঙ্গলমহল (Jongol Mohol) থেকে গৌড়বঙ্গ, প্রতিটি ব্লকে নেত্রীর আদর্শ সামনে রেখেই দলের ঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। বাংলার প্রতিটি ব্লকে এবং কলকাতা, হাওড়া, শিলিগুড়ি, আসানসোলের মতো পুরনিগমের সমস্ত ওয়ার্ডেই দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সামাজিক নানা কর্মকান্ডকে সামনে রেখেই সাধারণ মানুষকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নেত্রীর একটাই স্লোগান, তৃণমূল (TMC) মানে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের দল।
[আরও পড়ুন: শুধু বন্দে ভারত নয়, এবার রাজধানী, শতাব্দী, এমনকী লোকাল ট্রেনেও বসছে সিসি ক্যামেরা]
আগামী ২ জানুয়ারি নজরুল মঞ্চে দলের বর্ধিত কর্মসমিতির সভায় চারটি রাজনৈতিক বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রথমত, বাংলার আরও উন্নয়ন। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রের বঞ্চনা ও জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সামগ্রিক প্রচার। তৃতীয়ত, প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি। চতুর্থত, সর্বস্তরে দলীয় শুদ্ধিকরণের মাধ্যমে উন্নততর তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সমস্ত কিছুর পরেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, বারে বারে, নানা ইস্যুতে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, বাংলা তথা দেশের জনতার স্পন্দন সবথেকে ভালো অনুভব করেন, উপলব্ধি করেন বাংলার অগ্নিকন্যাই। তাই তো নতুন দল গড়ে ২৫ বছর পেরিয়ে এসে তিনি দেশনেত্রী, জনগনমনঅধিনায়িকা।