ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: নয় নয় করে নতুন মুখ ডজন পাঁচেক। ভোটের মুখে প্রচারের ব্যস্ততা তুঙ্গে। কিন্তু নতুন আনকোরা মুখ হলেই সাবধানতার সতর্কবার্তা দিচ্ছে তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব। যাকে বলে – মোক্ষম টোটকা। সাফ কথা – ‘ভোটের সময় নতুন মুখ দেখলেই সাবধান। বলুন, ফলপ্রকাশের পর দেখা হবে।’
কলকাতা পুরভোটকে (Kolkata Municipal Election) কেন্দ্র করে গত দু’সপ্তাহে পরপর কর্মিসভা চলছে। সেখানে আর পাঁচজনের সঙ্গে থাকছেন দলের শীর্ষ নেতারাও। প্রার্থীদের সঙ্গে একদফা খুঁটিনাটি আলোচনা চলছে। প্রয়োজনীয় টিপস দেওয়ার পালা সেরে নিয়েই চরম সতর্কতার কথাটা মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে এই টিপস দিচ্ছেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি (Subrata Bakshi)। কখনও কলকাতার দুই জেলার সভাপতি তাপস রায় ও দেবাশিস কুমাররাও। কী বলছেন তাঁরা? এই যেমন দু’দিন আগেই দলের একটি কর্মিসভায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসা প্রার্থীদের পাখি পড়ানোর মতো করে বুঝিয়েছেন রাজ্য সভাপতি। বলেছেন, ‘‘বুঝেশুনে লোকের সঙ্গে মিশতে হবে। এখন ভোটের সময়। অনেকেই দেখা করতে আসবে। লোক বুঝে দেখা করবে।’’ তাপস রায়ের নিদানও তাই। প্রার্থীদের বলছেন, ‘‘অচেনা লোকেদের সঙ্গে এখন কথা বলারই দরকার নেই। বলবে ভোটের পর আসুন।’’
[আরও পড়ুন: পরনে জিনস, অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলা তরুণীই কাটছে পকেট! চিড়িয়াখানায় সাবধান]
এই টিপসে কাজও হচ্ছে। এমনই জানাচ্ছেন প্রার্থীরা। সহজেই অযাচিত ভিড় পাতলা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই টোটকার কারণ কী? আরেক শীর্ষ নেতার ব্যাখ্যা, “এটা বক্সিদার এক অমোঘ অস্ত্র। তাঁর ঘরানার ক্লাস যাঁরা করেছেন, তাঁরাও একরকম। আসলে ভোটের মুখে অনেক সুবিধাবাদী মানুষের ভিড় লেগে থাকে। তাতে ফাঁদও পাতা থাকে। অনেকে নানা সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে নিজেদের কাজ করিয়ে নিতে চান। একেবারে যাঁরা আনকোরা, তাঁদের পক্ষে সৎ মুখ চেনা মুশকিল।” এই ফাঁদ কেমন? ওই নেতাই বুঝিয়ে দিলেন, “অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকে। শাসকদলের কাছাকাছি এসে তাঁরা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে চান। অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এই ধরনের ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি ধরা পড়লে পরে দলের ঘাড়েও দোষ চাপে। তার জন্যই এই সাবধানবাণী।”
[আরও পড়ুন: মানব পাচারের বড়সড় ছক! আনন্দপুরে ধৃত আরও ১৭ বাংলাদেশিকে জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য]
আর যিনি দায়িত্ব নিয়ে এই সাবধানবাণী দিচ্ছেন, সেই রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির বক্তব্য কী? তিনি বলছেন, “ভুল তো কিছু বলা হয়নি। দলের কথা ভেবেই তো বলা। দলের স্বার্থে প্রার্থীদের সাবধান করে দেওয়াটা কি খারাপ?” তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আর দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) দু’দিনের প্রচার রয়েছে একেবারে শেষ মুহূর্তে। তার আগে দলের উত্তর কলকাতার চেয়ারম্যান সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তায় বলেছেন, “ভোটে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। জিতে মানুষকে আরও পরিষেবা দিতে হবে।”