সন্দীপ চক্রবর্তী: তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ত্রিপুরায় সক্রিয় হতেই তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস পাঠাল ইডি (Enforcement Directorate)। আর অভিষেকের সফরের ঠিক আগের রাতে আগরতলায় বিজেপির হাতে আক্রান্ত হল তৃণমূল। জিবি বাজারে পথসভা চলাকালীন বিজেপির মিছিল থেকে তৃণমূলের নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে তুমুল পাথর ও ইটবৃষ্টি হয়। কোনওক্রমে রক্ষা পান কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh), বাংলার মন্ত্রী গোলাম রব্বানি। সভায় উপস্থিত বেশ কয়েকজন আহত হন। মিছিল থেকে কটূক্তি করা হয়। স্লোগান তোলা হয়, তৃণমূল মুর্দাবাদ। কুণাল ঘোষ গো ব্যাক। তৃণমূলের অভিযোগ, এভাবে ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না।
বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রচারে মঙ্গলবার আগরতলায় (Agartala) রোড শো করবেন অভিষেক। রোড শো শেষে এই জিবি বাজারেই জনসভা রয়েছে তাঁর। এছাড়া আগামী ২৩ জুন ভোটের আগেও সেখানে আর এক দফায় তাঁকে প্রচারে চাইছে ত্রিপুরার দলীয় সংগঠন ও বহু মানুষ। বঙ্গ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ ও ত্রিপুরা শাখা অনুরোধ করেছে, আরও একবার যদি অভিষেক আসেন, চেষ্টা করছি ২০ জুন যদি অভিষেকের দু’টি সভা ত্রিপুরায় করা যায়।” বস্তুত অভিষেক দলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েই ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন। তাঁর কনভয়ের উপর হামলাও হয়। আর মাত্র আড়াই মাসে তৃণমূল পুরভোটে ২০ থেকে ২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ফলে অভিষেককে চাপে রাখতেই তঁার স্ত্রীকে সিবিআই তলব, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
[আরও পড়ুন: প্রাইমারি TET দুর্নীতির তদন্তেও সিবিআই, চাকরি খোয়ালেন ২৬৯ জন]
রাতে পান্না দেবের সমর্থনে গোলমালের পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল (TMC)। দু’তিনধরেই অবশ্য বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের পোস্টার, ব্যানার ছেঁড়ার অভিযোগ উঠেছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে দলীয় কর্মীদের। এদিন সকাল থেকে আক্রমণ বেড়ে যায়। কীভাবে বিজেপির মিছিলকে ওই জায়গা দিয়ে যেতে অনুমতি দেওয়া হল, প্রশ্ন উঠেছে। গুটিকয়েকের মিছিল থেকে যখন ইটবৃষ্টি শুরু হয়, মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছিলেন কুণাল। তাঁর অভিযোগ, “আজ আগরতলা ও টাউন বড়দোয়ালিতে অভিষেকের রোড শো ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা দেখে ভয় পেয়েছে বিজেপি।”
আগরতলার মেলার মাঠের গান্ধী ঘাট থেকে বেলা বারোটা নাগাদ রোড শো শুরু হয়ে শেষ হবে জিবি বাজারে। সেখানেই হবে সভা। পুরভোটের প্রেক্ষিতে তৃণমূল দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। বিধানসভা উপনির্বাচনে তারকা প্রচারকের তালিকায় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক ছাড়াও সৌগত রায়, ফিরহাদ হাকিম, শত্রুঘ্ন সিনহা, মুকুল সাংমা, কুণাল ঘোষের মতো নেতৃত্ব রয়েছেন। পাশাপাশি সাংসদ অভিনেতা দেব, মিমি চক্রবর্তী, সায়নী ঘোষ, জুন মালিয়া, সোহম, মনোজ তিওয়ারি, সুদীপ রাহা, জয়া দত্তের মতো নেতারাও রয়েছেন।
[আরও পড়ুন: হজরত মহম্মদ বিতর্ক: কড়া হাতে অশান্তি দমন রাজ্যের, ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার দু’শোর বেশি]
এদিকে, শুক্রবার ইডি রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠিয়ে জানতে চেয়েছে, কয়লা পাচারের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনি ঠিক কবে সময় দিতে পারবেন। উল্লেখ্য, দিল্লির পরিবর্তে কলকাতার অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন নিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে গিয়েছিলেন অভিষেক-রুজিরা। তাঁদের আবেদন ছিল, কলকাতায় ইডির পূর্বাঞ্চলীয় অফিসে রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। পরবর্তীতে কলকাতার অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।