সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হায় সমাজ! রাত দখলের দিনে নারী স্বাধীনতা নিয়ে সোচ্চার হয়েছিল যে সমাজ, সাম্যের বার্তার বুলি আওড়ানো সমাজ, সেই সমাজই কিনা ইন্টারনেটে আর জি কর কাণ্ডের নির্যাতিতার ধর্ষণের ছবি-ভিডিও খোঁজে রাত-দিন এক করে দিচ্ছে! মুখোশের আড়ালে এ কোন সমাজ? প্রশ্ন উঠছে। 'সরষের মধ্যেই ভূত' থাকা সমাজে নারীরা শুধুই কি ভোগ্য? এত জনমত, পথে নেমে প্রতিবাদ-'বিপ্লব', সবটাই কি প্রহসন? কোথায় বিবেকের দংশন? আবারও ওঠে প্রশ্ন। ইন্টারনেটের সার্চ ইঞ্জিনে সমীক্ষার নীরিখে এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। যা কিনা ভিড়ের মাঝে 'মুখোশধারী' সমাজ নিয়ে আবারও ভাবতে বাধ্য করবে।
২০২০ সালে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রতি ১৬ মিনিটে একটি করে ধর্ষণের অভিযোগ জমা পড়ে। কলকাতার আর জি কর কাণ্ড আবারও দেশে নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। গত ৯ আগস্ট সেই নৃশংস ঘটনা ঘটার পর গুগল সার্চের শীর্ষ তালিকায় তরুণী ডাক্তারের খোঁজ। নিশ্চয়ই ভাবছেন? কলকাতার ঘটনার তথ্য জানতে চেয়ে সেই খোঁজ চালানো হয়েছে! আজ্ঞে না। দ্য ক্যুইন্ট-এর তরফে গুগল অ্যানালাইসিসে উঠে এসেছে এক রোমহর্ষক তথ্য। যেখানে দাবি করা হয়েছে, ২০ আগস্ট দুপুর ২টো অবধি নির্যাতিতার নাম করে তাঁর ধর্ষণের ভিডিও এবং ছবি দেখার 'চাহিদা' তুঙ্গে। এমনকী পর্ন সাইটেও আর জি কর নির্যাতিতার নাম নিয়ে ৩০০০ বার খোঁজ চালানো হয়েছে। অবিশ্বাস্য ঠেকলেও আরও একবার পড়ুন! যে সমাজ ধর্ষিতা-নির্যাতিতার ছবি-ভিডিও দেখার উল্লাসে মেতে ওঠে, যেখানে বিজ্ঞাপন থেকে গানের লাইন, সবেতেই নারীকে ভোগ্য বা প্রলোভন হিসেবে দেখানো হয়, সেখানে দাঁড়িয়ে আবারও সমাজের মানসিকতা প্রশ্নের মুখে দাঁড় হয়। ভিড়ের মধ্যে মিশে থাকা সেই 'ধর্ষকামী'রা নিত্যদিনই পথেঘাটে, চারপাশে মুখোশ পড়ে ঘুরছে। সোশাল মিডিয়ায় এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য শেয়ার করে নিন্দায় সরব হয়েছেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, স্বস্তিকা দত্তরা।
মানসিকতাই যেখানে রোগগ্রস্ত, সেখানে ঘরে-বাইরে, রাতে-দিনে কোথায় নিরাপদ মেয়েরা? দেশের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসেও যখন নারী স্বাধীনতা নিয়ে লড়তে হচ্ছে, একুশ শতকে দাঁড়িয়ে মেয়েদের নাইট ডিউটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নির্যাতিতার বিচার চেয়ে যেখানে উত্তাল দেশ, সেখানে সেই সমাজেই চলছে ধর্ষণের ছবি-ভিডিওর খোঁজ।