সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আবারও 'মিটু' অভিযোগে উত্তাল টলিউড। আর জি কর কাণ্ডের পর যেখানে সমাজ তথা কর্মস্থলে সম্মান-সুরক্ষার দাবিতে পথে নেমে একজোট হয়েছে নারীরা। সেখানে সিনে ইন্ডাস্ট্রিতেও অভিনেত্রী, মহিলা কলাকুশলীরা কতটা সুরক্ষিত? সেই প্রশ্ন আবারও নতুন করে মাথা চাড়া দিয়েছে। দিন কয়েক আগেই অরিন্দম শীলের (Arindam Sil) বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে মহিলা কমিশনের দারস্থ হয়েছিলেন নবীন প্রজন্মের এক অভিনেত্রী। তার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ফের ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর উইমেন-এর দ্বারস্থ আরও এক টলিউড অভিনেত্রী। পালটা মুখ খুললেন অরিন্দম শীল নিজেও।
২০১৭ সালের ঘটনা নিয়ে বছর তিনেক বাদে ২০২০ সালে প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছিলেন অভিনেত্রী। অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে 'মিটু' অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। তবে এবার বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর উইমেন-এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন সেই অভিনেত্রী। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, প্রয়োজন পড়লে পুলিশের কাছেও যেতেও প্রস্তুত ছিলেন তিনি। সম্প্রতি অরিন্দমের বিরুদ্ধে চুম্বনের অভিযোগ এনেছিলেন এক অভিনেত্রী। তারপরই বছর খানেক আগেরকার সেই ঘটনা নিয়ে মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হলেন আরেক অভিনেত্রী। তিনি জানিয়েছেন, পরিচালকের অফিসে স্ক্রিপ্ট রিডিং সেশনের জন্য গিয়েছিলেন তিনি। তখনই আচমকাই তাঁকে জাপটে ধরনে অরিন্দম। তখনই অস্বস্তিতে পড়ে যান অভিনেত্রী। কারণ সেখানে স্নেহের পরশের বদলে ছিল লালসা। এরপর চিত্রনাট্য পড়ার সময়ে অভিনেত্রীর চুলে হাত বোলান। এরপরই শরীরের নিচের দিকে ক্রমাগত হাত যাচ্ছিল পরিচালকের। এখানেই শেষ নয়! ওই অভিনেত্রী এও জানান যে, এরপর পরিচালক কাউচে বসে তাঁকে তাঁর পাশে বসার জন্যেও আহ্বান জানান। এবার প্রশ্ন এতদিন বাদে কেন মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হলেন অভিনেত্রী?
এপ্রসঙ্গে ওই অভিনেত্রী জানিয়েছেন, এই ঘটনা যখন ঘটে ২০১৭ সালে তখন তাঁর ডিভোর্স মামলা চলছিল। সন্তান ছোট। একা হাতেই বড় করতে হচ্ছিল। তাই তখন মুখ খোলার সাহস পাননি। তবে মাকে জানিয়েছিলেন। এই কথাগুলো বলার জন্য কে বিশ্বাসভাজন? সেটাও বুঝতে পারিনি তখন। পাছে আমার কাজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এরপর ২০২০ সালে যখন বিষয়টা নিয়ে মুখ খুলি, তখন পরিচালক আমাকে পালটা বলেন, আমি নাকি বিষয়টিতে রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করছি। এবার যখন দেখলাম আরও একজন অভিনেত্রী অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তখন আমার মনে হল, আমারও এবার প্রতিবাদ করা উচিত। এপ্রসঙ্গে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছে পরামর্শ চাইছেন। প্রয়োজনে পুলিশের দ্বারস্থ হতে হবে।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে অরিন্দম শীল বলছেন, "ঘটনার পর ওই অভিনেত্রীর সঙ্গে আমার দেখাও হয়েছে। আমার স্ত্রীর সঙ্গেও ওঁর কথা হয়েছে। ওই অভিনেত্রীর পাঠানো সমস্ত ম্যাসেজ আমার কাছে রয়ে গিয়েছে। যার একটাতে উনি বলেছিলেন- 'আপনি আমার পথপ্রদর্শক হোন।' এখন আইনজীবীর পরামর্শ মতোই চলছি।" ওই মেসেজ নিয়ে পালটা অভিযোগকারী অভিনেত্রীর জবাব, "সেইসময়ে আমি ভয় পেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল আমাকে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে হবে। তাই আমি যেন পরিচালকের থেকে পেশাগত সাহায্য পাই, সেইজন্যই ওই মেসেজটা করেছিলাম।"