আমের প্রেমে পাগল টলিউডের নায়িকারা। হিমসাগর, ল্যাংড়া থেকে আলফানসো- শুধুই কি নস্ট্যালজিয়া, নাকি ডায়েটকে বুড়ো আঙুল? শুনলেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী ও তিতাস।
অপরাজিতা আঢ্য: আমি ভীষণ আম খেতে ভালবাসি। আমার বাপের বাড়িতে ল্যাংড়া আমের গাছ ছিল। এখনও সেই গাছ রয়েছে। একবছর খুব ভাল ফলন হয় আর একবছর কম ফলন হয়। মা এখনও প্রচুর আম পাঠিয়ে দেয় এই আমের সময়। ছোটবেলায় তখন সেভেন বা এইটে পড়ি, জানলার ধারে বসে পড়ছি আর ঠিক সেই সময় আমার খুব প্রিয় বন্ধু তার দল নিয়ে আমগাছে উঠেছে, আর আমি পড়তে পড়তে ওদের দেখে চিৎকার করছি। একটা সময় থাকতে না পেরে খাতা- বই ফেলে ছুটলাম বাগানে ওদের দিকে একেবারে আঁশবটি নিয়ে। ব্যস, সব যে যেদিকে পেরেছে পাঁচিলের ওপর দিয়ে লাফ দিয়ে পালিয়েছে, কিন্তু আমার ওই বন্ধুটা পালাতে গিয়ে পড়বি তো পড় আমার দিকে পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে দু’জনের মধ্যে মারপিট শুরু। আমি যত ওকে মারছি, ও তত আমাকে মারছে। শেষে আমাকে খিমচি দিয়ে পালাল। তারপর রাতে এসে ও-ই আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। এমনই করতাম আম নিয়ে। আমের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় মধুগুলগুলি আম। ছোট রসাল হাত দিয়ে মুখের দিকটা ছিঁড়ে রস টেনে খাওয়া- সে যে কী তৃপ্তি, বলার নয়। আম, ইলিশ আর লুচি ছাড়া বাঙালি বাঙালি নয়। আমের সিজন মানেই রোজ আম চাই-ই।
মুমতাজ: আম আমার সবচেয়ে পছন্দের ফল। সব ধরনের আমই আমার দারুণ ভাল লাগে। মাঝে মাঝে দিনে একটার বেশিও আম খেয়ে ফেলি। আমাদের বাগানবাড়িতে ভরতি আমগাছ। আর এই সময় প্রচুর আম পড়ে। বহুবার আম কুড়িয়েছি। কাঁচা আম কাসুন্দি দিয়ে মেখে খাওয়ার স্বাদের কোনও তুলনা নেই। এই সেদিনও কাঁচা আম মাখা খেলাম। আমরস দারুণ লাগে। আর একটা জিনিস আমি আম উঠলে খাবই, সেটা হল ম্যাঙ্গো উইথ হোয়াইট বাটার। নুন ছাড়া মাখন ফেটিয়ে ওর মধ্যে আম মিশিয়ে খাওয়া জাস্ট অপূর্ব। আমের সিজনে শুধু আম, নো ডায়েট।
[ক্যানসার নিয়েও মঞ্চ দাপাচ্ছেন সতীশ, অভিনেতার পাশে থাকার অাহ্বান নাট্যদুনিয়ার]
পাওলি দাম: আম খেতে খুব ভালবাসি। আমের জন্য কোনও ডায়েট নেই। অনেকরকম আম রয়েছে, তার স্বাদও আলাদা। কিন্তু আমার সবচেয়ে পছন্দ গোলাপখাস। এই আম খুব কম চোখে পড়ে। একটা নির্দিষ্ট সময় আছে গোলাপখাসের। পুরো সিজন জুড়ে পাওয়া যায় না। ছোটবেলায় বাবা ঠিক খুঁজে আমার জন্য গোলাপখাস আম নিয়ে আসতেন। গোলাপখাসের গন্ধটা আমার অপূর্ব লাগে। ছোটবেলায় দুর্গানগরে পিসির বাড়ি গিয়ে আম কুড়িয়েছি, পেড়েওছি। বাবা আম পাড়া পছন্দ করতেন না। আমি লুকিয়ে কুড়োতাম। বাবার বন্ধুদের বাগানবাড়িতে গিয়েও আম পেড়েছি। কাঁচা আম মাখা কাসুন্দি আর লঙ্কা দিয়ে অপূর্ব লাগে। আমরসও ভীষণ পছন্দের। আমের সবকিছুই ভাল।
সোনালি চৌধুরি: আমার বাপের বাড়িতে দু’টো আমগাছ রয়েছে। ল্যাংড়া আম হয়। তাই আম কুড়ানোর অভিজ্ঞতা আমার শৈশবেই হয়েছে। এটা যে না করেছে, সে জীবনে বড় একটা আনন্দ থেকে বঞ্চিত। গত কয়েকদিনের ঝড়-বৃষ্টিতে প্রচুর আম পড়েছে। আমি আর আমার ছোট কচিকাঁচার দল মিলে আম কুড়োলাম। আমার সবথেকে পছন্দ হিমসাগর আম। ডায়েটে থাকি আর আমার ডায়েট রুটিনে রাতে কার্ব ইনটেক বন্ধ, কিন্তু আমি ডায়েটিশিয়ানকে বলেছিলাম, আমার ডায়েটে যা-ই রাখুন, আম রাখতেই হবে। দরকার হলে স্যুপ খেয়ে থাকব, কিন্তু আম খেতেই হবে। কাঁচা আম সরষের তেল, কাসুন্দি দিয়ে মাখা অপূর্ব। আলফানসো আমও আমার দারুণ পছন্দ। আমার বর ডেট করার সময় আমাকে একটা আলফানসো উপহার দিয়েছিল। আম আর দুধ দিয়ে করা আমরস উফ! আমের আচার চাটনি শুধু মনে করলেই তৃপ্ত হয়ে যাই।
তনুশ্রী চক্রবর্তী: আম আমার অলটাইম ফেভারিট। যে কোনও ফর্মে আম খেতেই আমার দারুণ লাগে। ছোটবেলায় এত ডায়েট রেস্ট্রিকশন ছিল না। তখন মন ভরে আম খেতাম। লোকজন আলফানসো নিয়ে মাতামাতি করে, কিন্তু আমার ফেভারিট ল্যাংড়া আর হিমসাগর। কলকাতায় যা আম পাওয়া যায়, ভারতের অন্য সব আম এর সামনে ডাহা ফেল। শুধু পাকা নয়, কাঁচা আম কাসুন্দি দিয়ে, আম তেল, আম ডাল, চাটনি সবই ভীষণ পছন্দের। এখন মাসে একটা আম খাওয়ার অনুমতি রয়েছে আমার, যেহেতু স্ট্রিক্ট ডায়েট ফলো করি। ওই শুধু একটা দিনের জন্য সারা মাস অপেক্ষা করি। ইচ্ছে করে রোজ খাই। তবে এখন খাওয়া বারণ, তাই রাস্তাঘাটে, বাজারে আমের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই।
[কেমন হল পরি পিসি ও ঘোঁতনের ‘রেনবো জেলি’র স্বাদ?]
The post ডায়েট ভুলে আমের প্রেমে মজেছেন টলিপাড়ার নায়িকারা, জানালেন মনের কথা appeared first on Sangbad Pratidin.