বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: সন্ধে নামলেই পার্টি অফিসে মার্কস-লেনিন কপচানো নয়। চলবে না নিচুতলার নেতা-কর্মীদের উপর খবরদারি। বদলে রাত কাটাতে হবে প্রান্তিক পরিবারের সঙ্গে। শুনতে হবে তাঁদের মনের কথা। মাসে অন্ততপক্ষে একবার। দলকে ফের ঘুরে দাঁড় করাতে এমনই নিদান দিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট (Alimuddin Street)। পারফরম্যান্স দেখেই দলীয় পদে পদোন্নতি। পার্টির সর্বস্তরের নেতা,কর্মীদের সাফ জানাল সিপিএম (CPM)।
গরিব মানুষজন ছিল ভরসা। তাঁরাই আজ মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। ভুলেও ফিরে তাকাচ্ছে না পার্টির দিকে। কারণ, খুঁজতে বসে চক্ষু চড়কগাছ আলিমুদ্দিনের ম্যানেজারদের। বারবার বলা সত্বেও পিছিয়ে পড়া এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে অনীহা দেখিয়েছে জেলা নেতৃত্ব। দু-চারজন দায়িত্ব নিয়ে প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করলেও সিংহভাগ নেতাই পার্টি অফিসে বসে রিপোর্ট তৈরি করেন। কাজের মূল্যায়ন হয় জেলা দপ্তরে বসে। যে যত বড় কমিটিতে, তাঁর পারফরম্যান্স ততই ভাল। দিনের পর দিন এমন রিপোর্টি হাতে পেয়ে নড়েচড়ে বসে অলিমুদ্দিন।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে তৃণমূলই, পাল্টা আক্রমণে বিজেপি]
সংগঠন সম্পর্কিত পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, জেলা নেতৃত্বকে বাধ্যতামূলকভাবে মাসে একদিন গরিব, আদিবাসী বা বস্তি এলাকায় গিয়ে রাত কাটাতে হবে। সেখানকার মানুষের মনের কথা তুলে এনে পার্টির কাছে রিপোর্টিং করতে হবে। কারা যাচ্ছেন আর কারা ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছেন সেদিকে কড়া নজর রাখবেন কমরেডকুলের নেতারা।
[আরও পড়ুন: রবিবারই তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন প্রয়াত সোমেন মিত্রর স্ত্রী শিখা মিত্র, ছেলে রোহনকে নিয়ে ধোঁয়াশা]
এরিয়া ও শাখা কমিটির নিষ্ক্রিয় সম্পাদকদের পদ ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন কমিটি নিষ্ক্রিয়, তার তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে। যত বেশি সম্ভব কমবয়সী কর্মীদের নিয়ে কমিটি পুনর্নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছে। ৩১ বছরের কম কর্মীদের আরও বেশি কমিটিতে স্থান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আলিমুদ্দিন। সিপিএম রাজ্য কমিটির এক সদস্য জানান, পার্টি সদস্যদের মধ্যে শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া হলেও কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তা হয়নি। ভোটবাক্সে হাতেনাতে তার ফল পাওয়া গিয়েছে। তাই এবার পার্টির কমিটি ভেঙে নতুনদের দায়িত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে শুদ্ধিকরণ হবে বলে মনে করছে দল।