সুপর্ণা মজুমদার: ক্রিকেট ও বলিউডের ভালবাসা বহুদিনের। বাস্তব হোক বা রুপোলি পর্দার কল্পনা, সবক্ষেত্রেই যেন এই দুই ভিন্ন ক্ষেত্র মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। সময়ের ফেরে স্থান পালটায়, পালটায় প্রেক্ষাপট। কিন্তু গল্পের অন্তর একই থেকে যায়। ২০০১ সালে ক্রিকেটের সাহায্যে ভুবনের ‘লগান’ মাফের কাহিনি দেখেছিলেন সিনেপ্রেমীরা। ২০২০ সালে দেখা গেল আফগান উদ্বাস্তু শিবিরের কিশোরদের লড়াই। বুড়ো হাড়েই সিনেমার দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন সঞ্জয় দত্ত (Sanjay Dutt)। তবে দু’ঘণ্টারও বেশি বড় সিনেমায় তাঁর একার পক্ষে সমস্ত কিছু করা সম্ভব নয়।
কাহিনিতে কোনও নতুনত্ব নেই। আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিজের স্ত্রী ও একমাত্র ছেলেকে হারিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর ডাক্তার নাসের (সঞ্জয় দত্ত)। বিষাদের সেই স্মৃতি মুখোমুখি হতে না চাইলেও আফগানিস্তানে যেতে হয় তাঁকে প্রয়াত স্ত্রীর NGO’র কাজে। সেখানে গিয়ে বিষাদমুক্তির উপায় পান নাসের। কী তা? ক্রিকেট। আফগানিস্তানের উদ্বাস্তু ক্যাম্পের শিশু-কিশোরদের ক্রিকেটের মাধ্যমে নতুন স্বপ্ন দেখাতে চান তিনি। সেই চেনা গল্প। খেলতে নাওয়া যাওয়া অভিমানী কিশোরের মান ভাঙানো, জাতপাতের লড়়াই ভুলে সাম্যের বার্তা, ক্রিকেট খেলতে উদ্বুদ্ধ করা, টিম তৈরি করা, প্রশিক্ষণের টুকরো টুকরো মুহূর্ত আর তারপর সবশেষে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে হারানো। যেন আমির খানের ‘লগান’-এর কাহিনিই আফগান মোড়কে মোড়ানো ‘তোরবাজ’ (Torbaaz)। মাঝে শুধু স্যুইসাইড বম্বারের তত্ত্ব কপচানো। এই আর কি!
[আরও পড়ুন: যৌনতা আর কমেডির মিশেলে নজর কাড়লেন কিয়ারা? জেনে নিন কতটা জমল ‘ইন্দু কি জওয়ানি’]
কাজারের চরিত্রে রাহুল দেব (Rahul Dev) নিজের সংলাপের উপর ভাল কাজ করেছেন। নার্গিস ফকরি (Nargis Fakhri) প্রতিবারের মতো কেবল সুন্দর আসবাবের কাজ করে গিয়েছেন। তবে আফগান শিশুদের চরিত্রে গুলাব, বাজের মতো চরিত্রে কিশোর শিল্পীরা বেশ ভাল অভিনয় করেছে।
[আরও পড়ুন: চেষ্টা সত্ত্বেও ‘ভাগমতী’ অনুষ্কার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উঠতে পারলেন না ‘দুর্গামতী’ ভূমি]
২০১৭ সালে ‘তোরবাজ’-এর শুটিং শুরু হয়। বেশিরভাগ শুটিংই হয়েছে আফগানিস্তানে (Afghanistan)। এটিই প্রথম বলিউড সিনেমা যা কিরঘিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে (Bishkek) শুটিং করা হয়েছে। ছবির এটিই সবচেয়ে বড় পাওনা। অসম্ভব সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য যা মনটা সত্যিই খারাপ করে দেয়। কারণ যুদ্ধের বিষ প্রকৃতির এই অপূর্ব সুন্দর দেশটাকে ছারখার করে দিয়েছে। যদি তা না হত, এই প্রকৃতির টানেই লক্ষ লক্ষ পর্যটক যেতে পারতেন। আর বলার মতো তেমন কিছুই পরিচালক গিরিশ মালিকের এই সিনেমায় পেলাম না।