সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’ মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই টোটা রায়চৌধুরীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই। বলিপাড়ায় তাঁর সফর নতুন না হলেও করণ জোহরের হাত ধরে তিনি এখন রাতারাতি ‘বং ক্রাশ’ হয়ে উঠেছেন। রণবীর সিংয়ের সঙ্গে ‘ডোলা রে ডোলা’ গানে টোটার নৃত্যশৈলীর যুগলবন্দী দেখে হতবাক হতে হয়েছে দর্শক-অনুরাগীদের। খোদ অনন্যা পাণ্ডে হল থেকে বেরিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘স্যর, আপনি কি কত্থকের তালিম নিয়েছেন?’ আর সেই ছবির বলিউড তারকাখচিত প্রিমিয়ারেই ‘বাঙালির আত্মাভিমানের’ জেরে এক কাণ্ড ঘটান টোটা রায়চৌধুরি!
মনে কৌতূহল জাগতেই পারে যে, মুম্বইয়ের হাইপ্রোফাইল প্রিমিয়ারে কী এমন করেছেন বাঙালি অভিনেতা? নিজেই ফাঁস করলেন টোটা। অভিনেতার কথায়, “অনেকেই উপদেশ দিয়েছিলেন যে বড় বড় সেলিব্রিটিরা আসবেন তাই ডিজাইনার স্যুট পরে যেতে। কিন্তু বাঙালির আত্মাভিমান তো, বলেছিলাম, না। আমি বাঙালি, ছবিতেও বাঙালি, অতএব নিখাদ বাঙালি পোশাকই পরব। তাই ধুতি পাঞ্জাবি পরেছি। আমার পোশাক পরিকল্পনায করেছেন অভিষেক রায়।”
এরপরই অভিনেতার সংযোজন, “২৮ শে জুলাই, নিজস্ব লয় ও ছন্দে অভ্যস্ত আমার মন্থর জীবন সহসা তীব্রবেগে ধাবিত হতে শুরু করল এই দিনটি থেকে। ২৭শে জুলাইয়ের রাত পর্যন্ত আমি ছিলাম মধ্য মানের। মাঝারি সফল, এক মাঝবয়সি অভিনেতা। কিন্তু প্রথমোক্ত দিনটি থেকে আমি নাকি হয়ে উঠলাম এক অতীব প্রতিভাবান অভিনেতা যার সম্বন্ধে জানতে অন্যান্য প্রদেশের দর্শকরাও আগ্রহী! পুরো গঙ্গারাম থেকে গঙ্গু গ্যাংস্টার ! প্রথমে একটু হকচকিয়ে গেলাম। তারপর খানিক কাষ্ঠ হেসে ভাবলাম বোধহয় বড়মাপের অভিনেতাদের সাথে কাজ করেছি তাই এটা মানুষের প্রাথমিক উচ্ছাস। কিন্তু রোববার রাত পর্যন্ত যখন ফোনে, মেসেজে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছার সুনামি হ্রাস পেল না বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেল, তখন বুঝলাম যে এটা দর্শকদের নিখাদ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।”
[আরও পড়ুন: বিধায়ক রাজের ‘আবার প্রলয়’-এ তৃণমূলের একঝাঁক তারকামুখ! সিরিজ দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী?]
নস্ট্যালজিয়ায় ভেসে গিয়ে টোটা লিখলেন, “ছোটো থেকেই মনখারাপ হলে বা আবেগপ্রবণ হয়ে উঠলে ছাদে উঠে পায়চারি করি। হাঁটতে হাঁটতে মনে পড়ে গেল গত সিকি শতাব্দীর পথচলা। না, সেটা মোটেই মসৃণ ছিল না। ইন্ডাস্ট্রির পিচ্ছিল পাকদন্ডী বেঁয়ে, দু’পা এগিয়ে দেড়’পা পিছিয়ে পড়ার নিরন্তর প্রয়াস, একেক সময় মনে হতো যে আর সহ্যশক্তিতে কুলোবে না। কিন্তু পরদিন আবার দাঁতে দাঁত চেপে পথচলা শুরু করতাম। ফুটবল খেলতাম বলে সবসময় নিজেকে বোঝাতাম যে খেলাটা নব্বই মিনিটের। বাঁশি না বাজা পর্যন্ত গোল করার আপ্রাণ চেষ্টা করে যেতে হবে। হাল ছাড়লে চলবে না। কিন্তু একক প্রচেষ্টায় তো আর সচরাচর গোল করা যায়না। আর এক্ষেত্রে করণ স্যার অর্থাৎ করণ জোহর যদি আমার উপর বিশ্বাস না রাখতেন, প্রতিথযশা শিল্পীদের প্রতিভার উৎকর্ষতা যদি আমায় আলোকিত না করত এবং, সর্বোপরি, দর্শকদের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ প্রাপ্ত যদি না হতাম, তাহলে মনে হয়না সাফল্যের কণামাত্র আমার নাগালের মধ্যে আসত। যাঁরা ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি’ দেখে ভালোবাসা ও আশীর্বাদ জানিয়েছেন, পাঠিয়েছেন, তাঁদের জানাই হৃদয়ের গভীর থেকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। সত্যি বলছি, আপনারা যতদিন আমার পাশে আছেন ততদিন আমার নৌকার পালে হাওয়া থাকবে।”