সুমিত বিশ্বাস: কুয়াশামাখা তাকদা এবারও হাত বাড়িয়েছে পাহাড়ি বন্ধুত্ব-র! মেঘ-কুয়াশা ঘেরা পাহাড়ি গ্রামে যে এবারও পর্যটন উৎসব। তবে এবার একেবারে বছরের শেষে। আর সেই পর্যটন উৎসবকে রাঙিয়ে দিতে জঙ্গলমহল থেকে সৈকত শহর, বাংলার পর্যটনের সব প্রান্তকেই শামিল হওয়ার ডাক দিয়েছে এই উৎসবের আয়োজক রঙলি রঙলিয়ট ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতি।
কুয়াশা মাখা তাকদা। নিজস্ব চিত্র।
২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। যেখানে টি গার্ডেন ট্যুর, ভিলেজ ট্যুর, অর্কিড সেন্টার ট্যুর, ফরেস্ট হাইক, কালচারাল শো, কিডস ট্রাডিশনাল, ফ্যাশন শো, লোকাল ফুড, অর্গানিক ফ্রুটস এন্ড ভেজিটেবল সেই সঙ্গে হস্ত শিল্প ও ট্রাডিশনাল পোশাক সমূহ তুলে ধরবে ওই উৎসব। তাকদার বিডিও মোনাজকুমার পাহাড়ি বলেন,"হিমালয়ের সৌন্দর্যকে সামনে রেখে এখানকার পর্যটনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতেই এই উৎসব। আমরা চাই এই উৎসবে শামিল হোক বঙ্গের অন্য পর্যটনও। জঙ্গলমহল থেকে সৈকত মিশে যাক এই পাহাড়ি উৎসবে।"
তাকদার চাবাগান। নিজস্ব চিত্র।
এই পাহাড়ি গ্রামে যখন-তখন কুয়াশা নেমে আসে। তাই এই পাহাড়ি অঞ্চলের নাম তাকদা। লেপচা ভাষায় তাকদার অর্থ মেঘে ঢাকা বা কুয়াশায় ঘেরা। প্রায় ৪ হাজার ফুট উঁচু। সেই পাহাড়ি উপত্যকায় চা বাগানে টি ট্রেল। সঙ্গে সুগন্ধি- ব্র্যান্ডেড লোপচু, তিস্তাভ্যালি-র মত চায়ে চুমুক। আর তখনই মেঘ-কুয়াশায় মেখে কমলালেবুর বাগানে হেঁটে বেড়ানো। প্রকৃতির সঙ্গে এইভাবে একাত্ম হতে যেন ডাকছে তাকদা। এই উৎসবে শামিল হয়েছে তাকদা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন, রয়াক গুম্বাদারা হোমস্টে অ্যাসোসিয়েশন, তিনচুলে ইয়ুথ ক্লাব, তাকদা পিনেফিল্ড ইউথ ক্লাব, আর আর হোম স্টে অ্যাসোসিয়েশন, রঙলি ট্যুরিজম ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।
তাকদার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। নিজস্ব চিত্র।
শৈলশহর দার্জিলিং থেকে ২৭ কিমি। একেবারে ক্যানভাসে আঁকা ছবির মত গ্রাম। সেই সবুজ উপত্যকায় আট আটটি চায়ের বাগান। রয়েছে হেরিটেজের ছোঁওয়াও। ব্রিটিশদের অন্যতম পছন্দের জায়গা ছিল এই ঢেউ খেলানো তাকদা। তাই এখানে ক্যান্টনমেন্ট তৈরি করেছিলেন তারা। তার হেরিটেজ বাংলো আজও রয়েছে। ১৯০৫ থেকে ১৯১৫ পর্যন্ত বাংলো গুলি তৈরি হয়। প্রায় ডজনখানেক বাংলো গড়ে ওঠে। সেই বাংলোর জানলা দিয়ে ঢুকে পড়ে মেঘ। সবুজ উপত্যকায় নাম না জানা অসংখ্য পাহাড়ি ফুল। আর রাতের রূপ যেন পাহাড়ি গ্রামের আলোয় সোনালী আভা ছড়ায়। আর এই পাহাড়ি গ্রাম থেকেই দেখা যায় আলোয় ভাসা কালিম্পংকে। যা দেখলে জুড়িয়ে যায় চোখ। এমনই অনন্যা।
তাকদার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। নিজস্ব চিত্র।