সুব্রত বিশ্বাস: নিউ নর্মালে মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ফিরে যাচ্ছে কর্মস্থলে। কেউ বা পরিজনের কাছে। কেউ বা লকডাউনের খোঁচায় বিদ্ধস্ত হয়ে একটু বেরিয়ে পড়তে চাইছেন। কিন্তু প্রত্যেকের একই সমস্যা। দূরপাল্লার ট্রেনের সংখ্যা একেবারে কম। কষ্ট করে যেতে চাইলেও অসংরক্ষিত কামরা না থাকায় নির্ভর করতে হচ্ছে সংরক্ষিত কামরার উপরই। তবে সেখানেও ট্রেন সংখ্যা নগণ্য হওয়ায় মিলছে না টিকিট। ট্রেনের আকালে যাত্রীদের অসুবিধা চরমে।
মুম্বইগামী ট্রেন মাত্র একটি স্পেশ্যাল ও একটি দ্বিপাক্ষিক। দুটি ট্রেনেই ওয়েটিং লিস্টের তালিকা গড়ে আড়াইশোর উপর। দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস, পূর্বা এক্সপ্রেস ও আনন্দবিহার এক্সপ্রেস স্পেশ্যাল হয়ে চলছে। সেখানেও সব ট্রেনে ওয়েটিং লিস্ট গড়ে দেরশোর উপরে। সাধারণ সময়ে হাওড়া (Howrah St.) ও শিয়ালদহ (Sealdah) থেকে দিল্লির দিকের ট্রেনের সংখ্যা দশের বেশি থাকে। তাই এখন তিনটি ট্রেন থাকায় চাহিদা তুঙ্গে বলে রেল সূত্রে খবর। বেঙ্গালুরুর দিকে দুরন্ত এক্সপ্রেস ছাড়া অন্য ট্রেন চলছে না। ফলে সেখানেও ওয়েটিং লিস্ট একইরকম। উত্তরবঙ্গের দিকে চারটি দৈনিক ও ছ’টি সাপ্তাহিক ট্রেন চালু হয়েছে। টিকিটের চাহিদা সেখানেও প্রচুর। এই পরিস্থিতিতে ট্রেন না বাড়ায় যাত্রীদের অসুবিধা চরমে।
[আরও পড়ুন: জন্ম থেকেই শিরদাঁড়া ‘S’ অক্ষরের মতো! জটিল অস্ত্রোপচারে নাবালিকাকে সুস্থ করল কলকাতার হাসপাতাল]
যাত্রীদের অভিযোগ, এই সুযোগে হাওড়া স্টেশন চত্বরে দালালদের দৌরাত্ম্য চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্টেশনের সংরক্ষিত টিকিট কাউন্টার ও আশপাশে অসংখ্য দালাল দৈনিক দাপট দেখিয়ে বেড়াচ্ছে বলেই অভিযোগ। স্লিপার ক্লাসের টিকিটের মূল্য তিন থেকে চার হাজার টাকা। ফলে তারা সাধারণ যাত্রী থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের পকেট কাটছে নির্দ্বিধায়। অভিযোগ, এই দালালদের হাত এতটাই লম্বা যে, ভুয়ো নামের টিকিটও যাত্রীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। রামের নামের টিকিটে শ্যামের যাত্রা নির্বিঘ্নে করতে টিকিট পরীক্ষকদের সঙ্গে এদের সখ্য সম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হচ্ছে। অন্য নামে যাত্রা করলেও কর্তব্যরত টিকিট পরীক্ষক কিছুই বলেন না। কারণ দালালদের সঙ্গে সমঝোতা। দালালরা আগের থেকে বেনামে বহু টিকিট কেটে তা যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে মোটা দামে। এছাড়া এমার্জেন্সি কোটাতেও তাদের বহু টিকিট দেন প্রভাবশালী বহু রেলকর্মী। এজন্য গোপন সমঝোতাও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনের সংখ্যা কম থাকায় সমস্যা চরমে। পাশাপাশি রেলকর্মীরা সংক্রমিত হচ্ছেন। হাওড়ায় টিকিট পরীক্ষকদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে তাদের অভিযোগ। গত শুক্রবার এক সঙ্গে তেরোজন আক্রান্ত হয়েছেন বলে তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। যাত্রী সংস্পর্শে আসায় সংক্রমণ বাড়ছে বলে তাদের মত।