সুব্রত বিশ্বাস: ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিলম্ব ট্রেন। এই ঘটনায় ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল কলকাতা ও হাওড়া স্টেশনে। ঘটনার জেরে স্টেশন ম্যানেজারকে ঘিরে চলল বিক্ষোভ। দীর্ঘ বিলম্বের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়লেন ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত অব্যবস্থার ছবি ভারতীয় রেলে (Indian Rail)।
বৃহস্পতিবার রাত ৯.৪০ মিনিটে কলকাতা স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে জানানো হয়, ট্রেন ছাড়বে রাত দুটোর। এরপর ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের জানানো হয়, রক্ষণাবেক্ষণ করে ট্রেনটি ছাড়বে সকাল ছ’টার পর। এদিকে রাতে বন্ধ করে দেওয়া হয় স্টেশনের পাখা। যার জেরে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন বয়স্ক ও শিশুরা। ছিল না ব্যবহারযোগ্য শৌচালয়ও। এই পরিস্থিতিতে রেল পুলিশ (RPF) ভিআইপি লাউঞ্জ খুলতে অনুরোধ করলে রাজি হননি স্টেশন ম্যানেজার। যার জেরে স্টেশন ম্যানেজারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন যাত্রীরা। এই ঘটনায় রাতভর ধুন্ধুমার পরিস্থিতি চলে কলকাতা স্টেশনে (Kolkata Station)। যাত্রীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে শেষে ভিআইপি লাউঞ্জ খুলতে বাধ্য হন স্টেশন ম্যানেজার। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সকাল ৬.৫৫ মিনিট নাগাদ ট্রেনটি কলকাতা থেকে ছাড়ে।
কলকাতা স্টেশনের পাশাপাশি শুক্রবার দুপুরে একই অবস্থা দেখা যায় হাওড়া (Howrah) থেকে দিঘাগামী কাণ্ডারী এক্সপ্রেসে। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে সাড়ে চার ঘণ্টারও বেশি সময় দেরি করে ট্রেন। এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন যাত্রীরা। অনুসন্ধান অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় যাত্রীদের। দিন কয়েক আগে একই কারণে হাওড়া নিউ কমপ্লেক্সে অনুসন্ধান অফিসে ভাঙচুরের ঘটনায় এদিন তটস্থ ছিল রেল পুলিশ। ফলে যাত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে পরিস্থিতির সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ডাউন কাণ্ডারি এক্সপ্রেস বিকেল পাঁচটার পর হাওড়া আসে এবং ট্রেনটি আপে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ রওনা দেয়। ডাউন ট্রেনের এই অস্বাভাবিক বিলম্বের কারণ জানাতে পারেনি দক্ষিণ পূর্ব রেল। সিপিআরও ও খড়গপুরের সিনিয়র ডিসিএম দু’জনেই জানান, লিঙ্ক ট্রেন বিলম্বে ট্রেন অনিয়মিত। কিন্তু কেন লিঙ্ক ট্রেনে এই বিলম্ব তার কারণ জানাতে পারেনি কেউই।
[আরও পড়ুন: ‘বন্দুক দেখিয়ে ধর্ষণ’, দেবেগৌড়ার নাতির বিরুদ্ধে হাড়হিম অভিযোগ দলেরই কর্মীর!]
এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ ট্রেনের যাত্রীরা জানান, 'ট্রেনটি অস্বাভাবিক দেরিতে ছাড়ায় গভীর রাতে দিঘা পৌঁছবে। সেই সময় হোটেল পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে, চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হবে। আবার ওই ট্রেনটি হাওড়া ফিরবে এমন সময় যে, যাত্রীরা টিকিট কেটেও যাত্রা করতে পারবেন না। ফলে বাধ্য হয়ে সড়কপথে আসতে হবে তাঁদের।' এই ঘটনা বহু দিন ধরে প্রায়ই হচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।