সুব্রত বিশ্বাস: মোদি ‘প্রশস্তি’তে ব্যস্ত রেল। যাত্রী সমস্যার দিকে নজরই নেই প্রশাসনের বলে অভিযোগ উঠেছে বারবার। ট্রেনের অতিরিক্ত বিলম্ব (Train Late)। বাতিল অসংখ্য ট্রেন। বহু ট্রেন ঘুরপথে যাত্রা করছে। এই তিনের ‘কষাঘাতে’ যাত্রী জীবন বিপন্ন। যাত্রীদের অভিযোগে কান নেই কর্তাদের। রামপুরহাট (Rampurhat) থেকে চাতরা পর্যন্ত নতুন তৃতীয় লাইনের কাজ শুরু হওয়ায় শুক্রবার থেকে আগামী ১৩ দিনে অসংখ্য ট্রেন বাতিল ওই শাখায়। ৩৬টি দূরপাল্লার ট্রেন আজিমগঞ্জ দিয়ে ঘুর পথে চলবে। মানুষজন আগাম টিকিট কেটেও যেতে পারছেন না। এদিকে ঘুরপথে ট্রেন চালানোয় বহু ট্রেন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। ফলে যাত্রী হয়রানি চরমে উঠেছে শুক্রবার থেকে।
যাত্রীদের সুরক্ষা ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য কাজ। ফলে বিলম্ব থেকে বাতিল – সবই সইতে হবে যাত্রীদেরই। এই বড় ধরনের যাত্রী হয়রানি কমানো সম্ভব ছিল বলে মনে করেছেন রেলেরই এক বাণিজ্যিক অধিকর্তা। তাঁর মতে, এক সঙ্গে সব কাজ না করে দফায় দফায় করলে যাত্রী জীবনে এত বড় ধাক্কা লাগত না। ‘ফেজ বাই ফেজ’ বা সেকশন ধরে কাজ করলে সমস্যা বাড়তি রূপ নিত না। তিনি একেবারে সরাসরি বলেছেন, রেল এখন খরচের পথে হাঁটছে। শুধু কাজ দেখাতেই এক সঙ্গে কাজ শেষ করতে চাইছে। মূলত এটা রাজনৈতিক অভিসন্ধি (Politics) বলে মনে করেছেন রেলের কর্তাদের একাংশ। চব্বিশের ভোটকে (Lok Sabha Election 2023)সামনে রেখেই কাজের দ্রুততা। কাজ শুরু করে দিলে বা শেষ করলেই ভোটের পালে হাওয়া লাগাতে পারবে কেন্দ্র।
[আরও পড়ুন: ‘একটু কমিয়ে দিতে বলুন না’, মহিলার আবেদনে অবাক ফিরহাদ]
কাজ নিয়ে বরাবরের মতো এখনও ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে টেকনিক্যাল বিভাগগুলির ঝামেলা চলছে। টেকনিক্যাল মানে ইঞ্জিনিয়ারিং, সিগন্যাল বিভাগগুলি তড়িঘড়ি কাজ শেষ করতে লাইছে। যদিও আর্থিক ক্ষতির জন্য ট্রাফিক বিভাগ এই সিদ্ধান্ত মানতে চায় না। ট্রেন বাতিল বা ঘুরপথে মানে টিকিট ফেরত। ফলে আয় কমার শঙ্কায় ট্রাফিক (কমার্শিয়াল ও অপারেশন বিভাগ) বিভাগ এই পদ্ধতি চায় না। এবারও চায়নি। ফলে টেকনিক্যাল বিভাগের কোপে পড়তে হয়েছে ট্রাফিক বিভাগকে। একসঙ্গে কাজ শেষ করার অর্থ মানে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কাজের দাবি তোলা হবে ভোটের সময়। ফলে কাজের জন্য রাজনৈতিক একটা চাপ থেকেই যায়।
[আরও পড়ুন: “দিব্যাঙ্গ ছাত্রকে পর্যন্ত র্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়েছে”, যাদবপুর কাণ্ডে বিস্ফোরক অরিত্র দত্তবণিক]
অন্যদিকে, পুজোর (Durga Puja) আগে কাজ শেষ করার লক্ষ্যে দ্রুত গতির কাজ। কারণ, পুজোর পর অর্থবর্ষের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার আয় করার কাজ শুরু হবে। সেই আয়ের পথে যাতে বাধা না আসে সেজন্য কাজ শেষ করা হবে পুজোর আগেই।