সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: দীর্ঘ লকডাউন। তারপর আনলক পর্ব। সারা বিশ্বের মতো ক্ষতিগ্রস্ত উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের পর্যটনও। ইতিমধ্যেই দার্জিলিং (Darjeeling) পাহাড়ে পর্যটন সরকারিভাবে খুলে গিয়েছে। ডিসেম্বর পয়লা থেকে খুলে যাচ্ছে সিকিমও (Sikkim)। ফের আশায় বুক বাঁধছে পর্যটন মহল। তবে সরকারিভাবে পাহাড়ের জন্য এটি অফ সিজন। আর অফ সিজনে পর্যটক টানতে তুষার পর্যটনকে পাখির চোখ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
সাধারণত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে নির্দিষ্ট উচ্চতায় বরফ পড়া শুরু করে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বরফে ঢাকা থাকে অনেক এলাকা। মার্চ পর্যন্ত এই তুষারপাত ঘটে। চলতি বছরে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকেই বেশ কিছু এলাকায় তুষারপাত শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে ডিসেম্বরের শেষ থেকে বেশ কিছু এলাকা পর্যটকদের জন্য ‘দুর্গম’ বলে ঘোষণা করা হতে পারে। তার আগে পর্যন্ত তুষার পর্যটনকে কাজে লাগিয়ে দেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে চাইছেন টুর অপারেটররা।
এ বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব পাহাড়-সহ তরাই ডুয়ার্স এলাকাতেও পর্যটকদেরও বেশি করে আস্তে আহ্বান জানাচ্ছেন। তুষারপাত হয় এমন এলাকার একটি অগ্রাধিকারের তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তরের পর্যটন বিশেষজ্ঞ রাজ বসু। রাজবাবু জানান, পর্যটকদের কাছে তুষারপাত দেখার জন্য সবচেয়ে পছন্দের ডেস্টিনেশন টাইগার হিল (Tiger Hill)। তালিকায় দু’নম্বরে রয়েছে সান্দাকফু (Sandakphu)। তিন নম্বরে পূর্ব সিকিমের জুলুক, ছাঙ্গু, বাবা মন্দির। সবচেয়ে বেশি তুষারপাত এবং সবচেয়ে বেশি সময় ধরে তুষারপাত হলেও উত্তর সিকিমের লাচুং-লাচেন অগ্রাধিকার তালিকায় সবচেয়ে শেষে রয়েছে। তার কারণ হিসেবে রাজাবাবু জানিয়েছেন, লাচুং, লাচেনের পারমিট জোগাড় করতে গ্যাংটকে গিয়ে রাত্রিবাস করতেই হয়। যাঁরা দু’তিন দিনের ছুটি নিয়ে আসেন, তাঁদের পক্ষে লাচুং কিংবা লাচেন ঘুরতে যাওয়া সম্ভব নয়।
[আরও পড়ুন: ভীষণ অদ্ভুত! বিশ্বের এই পাঁচ দেশে কোনও বিমানবন্দরই নেই!]
রাজবাবু বলেন, “ইতিমধ্যেই আমরা এই অগ্রাধিকারের তালিকা তৈরি করে ব্রশিউর তৈরি করতে দিয়েছি। তাতে ছবি-সহ এলাকার বর্ণনা এবং যাতায়াতের নির্দেশ বর্ণনা করা হচ্ছে।” ২৮ ও ২৯ নভেম্বর কলকাতার দক্ষিণাপণে একটি পর্যটন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে তুষার পর্যটনকে বিশেষ প্রাধান্য দেওয়া হবে।
হিমালয়ান হসপিটালিটি এন্ড ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি সম্রাট সান্যাল জানান, গত বছর থেকেই শীতকালীন পর্যটনে জোর দেওয়া হচ্ছিল। তাতে তুষারপাত বেশি হওয়া এলাকায় বাড়তি মনোযোগ আকর্ষণের একটা চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। কোন একটি বিষয়কে নির্দিষ্ট করে ব্র্যান্ডিং করে পর্যটক টানা গেলে তাতে আখেরে গোটা সার্কিটেরই লাভ। ফলে যাঁরা ঘুরতে যেতে চেয়ে খোঁজখবর করছেন, তাঁদের তুষারপাত সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলির বেশি করে তুলে ধরা হচ্ছে।