সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ ৩ কিলোমিটার পথ একটানা ঝুলতে ঝুলতে এলেন রোপওয়েতে। বামে, ডানে তাকাতেই চোখাচোখি হল হিমালয়ের তুষারাবৃত শিখরশ্রেণির সঙ্গে। তারা বলে দিল, হলেনই বা আপনি ঝুলন্ত, ভয়ের কিছু নেই!
তার পর? পা যখন মাটি ছুঁল?
Advertisement
মাটি যদিও পাবেন কি না, খুব একটা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। উত্তরাখণ্ডের এই জায়গায় মাটি বেরিয়ে থাকে বছরের খুব সামান্য সময়েই!
বাকিটা বরফের রাজত্ব। ঝকঝকে, আলো ঠিকরে আসা, চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়া বরফ! বাড়ির চালে, গাছের ডালে, পথের ঢালে- সর্বত্র!
এটাই আউলির মাহাত্ম্য! কেন না, বরফ আপনি অনেক জায়গাতেই দেখেছেন! কিন্তু, বরফের মধ্যে বাস করেছেন খুব কম! সেই সুযোগটাই পর্যটকদের হাতে তুলে দেয় আউলি। ঠিক যেমনটা বিদেশি ছবিতে দেখে থাকেন, আউলির নিসর্গও তেমনটাই!
তফাতের মধ্যে এ ষোল আনা ভারত। যোশিমঠ থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরেই!
বলাই বাহুল্য, রূপেই মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে আউলি। দেওদার, ওক আর বরফ যে জায়গার ঢালকে করে তুলেছে রূপকথার মতোই মোহময়।
আউলির মজা এই বরফেই! তার বরফঢাকা ঢালে চলে স্কিয়িং। সেই ঢালের মাথার উপর দিয়ে ঝুলতে ঝুলতে আপনমনে পাড়ি দেয় রোপওয়ের কেবল কার। সব মিলিয়ে, অ্যাডভেঞ্চার হলিডে-র জন্য হন্যে হয়ে উঠলে এবারের শীতে আপনার গন্তব্য হতেই পারে আউলি!
শীতেই বা কেন বিশেষ করে? আসলে এই সময়টায় আপনি যদি সাহস করে আউলি পৌঁছন, তাহলে আপনার পাওনা হবে তুষার বৃষ্টি। ঝিরিঝিরি বরফ পড়তে দেখবেন আপনার ঘরের জানলা দিয়ে। দেখতে পাবেন, একটু একটু করে আরও সাদা চাদরে নিজেকে ঢেকে নিচ্ছে উপত্যকা। চলতে-ফিরতে আচমকাই দেখতে পাবেন, বরফের বৃষ্টিতে সাদা হয়ে উঠল জ্যাকেটটা!
কপাল আর একটু ভাল হলে প্রত্যক্ষ করতে পারবেন তুষারঝড়ের ভয়ঙ্কর, সুন্দর চেহারাও! চিন্তার কিছু নেই, আউলি তুষারঝড়ে কাউকে বিপদে ফেলে না। বড় জোর একটা দিনের জন্য ঘরবন্দী করে রাখতে পারে!
চার পাশের সোঁ-সোঁ আওয়াজের মধ্যে, ঝড়ে পাক খাওয়া বরফের মধ্যে এরকম একটা দিনযাপনও কিন্তু রেহাই দিতে পারে একঘেয়েমি থেকে!
বাকিটা আপনার মর্জি!
কী ভাবে যাবেন:
• আউলির সব চেয়ে কাছের বিমানবন্দর দেহরাদুনের জলি গ্রান্ট। সেখান থেকে আসতে হবে গাড়িতে।
• ট্রেনে নামতে পারেন হৃষীকেশ বা দেহরাদুনে। সেখান থেকে গাড়ি ভরসা!
• যোশিমঠ পৌঁছে, কিছুটা গাড়িতে, বাকি রাস্তা রোপওয়ে ধরেও পৌঁছনো যায় আউলি!
The post দেওদার, ওক আর বরফ মেশা রূপকথার দেশে appeared first on Sangbad Pratidin.