বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বেঙ্গল সাফারি পার্ক আরও আধুনিক এবং আকর্ষণীয় করে তোলার কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার বেঙ্গল সাফারি পার্ক পরিদর্শনের পর এমনই জানিয়েছেন বনদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। চলতি বছরে তৈরি হবে শিশুদের জন্য অ্যাডভেঞ্চার পার্ক, সজারুর নতুন এনক্লোজার, ছোট জলচর পাখিদের পাখিরালয়, অজগর ও গোসাপের বাড়ি, কম্বো প্রবেশদ্বার! ধাপে ধাপে সব তৈরি হবে। বৃহস্পতিবার বেঙ্গল সাফারি পার্কে মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য জু অথরিটির সদস্য সচিব সৌরভ চৌধুরী, উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভি, পার্কের ডিরেক্টর ই বিজয় কুমার-সহ অন্যরা।
মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, "সাফারি পার্ক উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য অ্যাডভেঞ্চার পার্ক গড়ে তোলা হবে।" বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেঙ্গল সাফারি পার্কে গত আর্থিক বছরে আয় হয়েছে সাড়ে ৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চিড়িয়াখানায় আয় হয়েছে ৮ কোটি ৩৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ৬৯৭ টাকা। এই সময়ে চিড়িয়াখানা রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হয়েছে ১১ কোটি ৯৫ হাজার ৪৭৪ টাকা। চলতি বছরের প্রথমদিন রেকর্ড ভিড় ছিল সেখানে। ৬ হাজার ১৯৫ জন দর্শনার্থী এসেছে। আয়ের পরিমাণ ছিল ১২ লক্ষ ৮১ হাজার ৩৯০ টাকা।

বনদপ্তরের আধিকারিকদের পেশ করা ওই রিপোর্টে বেশ আপ্লুত ছিলেন মন্ত্রী। তাই আগামী বিভিন্ন প্রকল্পের কথা জানাতে তিনি ভোলেননি। মন্ত্রী জানান, চলতি বছরেই সাফারি পার্কে তৈরি হতে চলেছে শিশুদের জন্য অ্যাডভেঞ্চার পার্ক, সজারুর নতুন এনক্লোজার, ছোট জলচর পাখিদের পাখিরালয়, অজগর ও গোসাপের বাড়ি, কম্বো প্রবেশদ্বার। পাশাপাশি আগামীতে পরিকাঠামো উন্নয়নের কী কাজ হবে, সেটাও ছকে রেখেছেন। তিনি আরও জানান, আগামীতে তৈরি হবে চশমামুখো লেঙ্গুর, ম্যান্ড্রিল, জলহস্তি, সাংহাই হরিণের এনক্লোজার, অ্যাকোরিয়াম, মিশ্র পাখিদের আবাসস্থল।
সাফারি পার্কের দশম বর্ষে পা রেখেছে এবার। মোট ২ লক্ষ ৮৩ হাজার ৩৯ জন পর্যটক এসেছেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কর্মসূচিও পালিত হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, "সাফারি পার্কে ছাত্রছাত্রীদের জন্য শিক্ষা ও সচেতনতামূলক ১৮টি শিবির হয়েছে। সেখানে দেড় হাজার ছাত্রছাত্রী অংশ নিয়েছে। চল্লিশটি স্কুল ও প্রতিষ্ঠান সাফারি পার্কে এসেছে। শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ হাজার।" বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পার্কে ৩০টি পশু ও পাখির জন্ম হয়েছে। তার মধ্যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে ৩টি, এশিয়াটিক সিংহ শাবক ১টি, সাংহাই হরিণ শাবক ৪টি। ২০টি প্রাণীর শরীরে মাইক্রো চিপস বসানো হয়েছে। ৯১টি প্রাণীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। কচ্ছপ গণনা ও লিঙ্গ নির্ধারণ হয়েছে। মন্ত্রীর সফরসঙ্গী বন কর্তাদের কেউ এদিন মুখ খোলেননি।