সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ষায় রূপ বদলায় প্রকৃতি! শহরের প্যাচপ্যাচে কাদা, জমা জল, ভেজা বর্ষাতি আর রোজকার একঘেয়ে রুটিন ছেড়ে মন টানে বৃষ্টির জলে ভেজা সবুজে ঘেরা প্রকৃতি। মন চায় প্রকৃতির মাঝে কয়েকটা দিন কাটিয়ে আসতে। বর্ষার উত্তরবঙ্গ, দিঘা, মন্দারমণি এখন ক্লিশে। বদলে 'মনসুন' ট্যুরিজমের 'হটকেক' পড়শি ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের একাধিক এলাকা।
রইল এমনই কিছু বেড়ানোর জায়গার হদিশ।
গালুডি, ঝাড়খণ্ড: সুবর্ণরেখার পাশে ছোট্ট শহর। তাকে জড়িয়ে রেখেছে সাতগুরুম নদী ও তার শাখারা। ঘাটশিলা থেকে ৯ কিলোমিটার এবং জামশেদপুর থেকে ৪৩ কিলোমিটার দূরের শহরের বর্ষাভেজা জঙ্গলে মোড়া পথে হাঁটলে মন শান্ত হতে বাধ্য। জঙ্গলের রাস্তায় দেখা মিলতেই পারে হাতি বা হরিণের। চাইলে নেকড়া ডুঙরি, ফুলডুঙরি কিংবা রুক্মিনী পাহাড়ে ট্রেকও করে আসতে পারেন। সুবর্ণরেখার পাড়ে বসে সূর্যাস্ত দেখতেও মন্দ লাগবে না। সঙ্গে গাড়ি থাকলে বা লোকাল গাড়ি ভাড়া নিয়ে ৪ কিলোমিটার দূরের বুরুডি লেক কিংবা ধারাগিরি জলপ্রপাত থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন। হাতে ২-৩ দিনের ছুটি থাকলে চলে যেতেই পাড়েন গালুডি।
ধানবাদ, ঝাড়খণ্ড: বর্ষায় সৌন্দর্য বাড়ে জলপ্রপাতগুলির। মরশুমি বারিধারায় পুষ্ট হয় জলপ্রপাতের উৎসরা। ফলে জলপ্রপাতের দামাল রূপ দেখে মুগ্ধ হন পর্যটকরা। সেই রূপ দেখতে হলে হাতেগোনা কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে বেড়িয়ে আসতে পারেন পড়শি রাজ্যের ধানবাদ থেকে। সেখানে রয়েছে ভাতিন্ডা এবং বামনগোড়া জলপ্রপাত। শুধু ঝরনা নয়, দেখে নিতে পারেন পাঞ্চেত এবং মাইথন জলাধার। এছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু মন্দিরও। চাইলে রোড ট্রিপে ঘুরে আসতে পারেন এই শহর থেকে।
পাত্রাতু ভ্যালি, ঝাড়খণ্ড: পর্যটনের মানচিত্রে নবীন রাঁচির এই পাত্রাতু ভ্যালি। রাঁচি শহর থেকে এর দূরত্ব ৩২ কিলোমিটার। পত্রাতুর সৌন্দর্য শুরু হয় শহরের কোলাহল ছাড়িয়ে খানিক এগোলেই। চড়াই শুরু হওয়ার আগেই শুরু হয়ে যায় প্রকৃতির উজাড় করে রূপ। বর্ষার দিনে পত্রাতু ঘন সবুজ। অনুচ্চ পাহাড়ের বুকে এঁকেবেকে উঠেছে কালো পিচের মসৃণ রাস্তা। এখানে রয়েছে নানা ওয়াটার স্পোর্টসের ব্যবস্থা। পাত্রাতু থেকে পালানি জলপ্রপাতের দূরত্ব মাত্র ৯ কিলোমিটার। বর্ষায় রাস্তাটি বেশ উপভোগ্য।
সন ঘাগরা জলপ্রপাত, ওড়িশা: ওড়িশার কেন্দুঝার শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। 'সানা' অর্থ ছোট এবং "ঘাগরা" অর্থ জলপ্রপাত। জলপ্রপাতটি মাছ কান্দানা নদীর উপর অবস্থিত। সবুজে মোড়া। চারিদিকে শান্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের জন্য বেশ আকর্ষণীয়। জলের আওয়াজ শুনতে শুনতে কীভাবে সময়টা কেটে যাবে, তা বোঝাও যাবে না।
কানহাকুণ্ড, ওড়িশা: পড়শি রাজ্যের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন কানহাকুণ্ড। ভুবনেশ্বর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে ওড়িশার কালাহান্ডি জেলায় অবস্থিত। হাইকিংয়ের জন্য আদর্শ। বর্ষায় আরও সুন্দর হয়ে ওঠে এই গিরিখাত।
তাহলে আরও দেরি কেন, অফিস ছুটি নিয়ে প্রিয়জন আর পরিবারকে বগলদাবা করে বেরিয়ে পড়ুন এই বর্ষায়।
