shono
Advertisement
Underrated Destination

ঘুরতে যেতে ভালোবাসেন? চেনা পথ ভুলে পাড়ি দিন দেশের এই পাঁচ অফবিট জায়গায়

না গেলেই মিস!
Published By: Sulaya SinghaPosted: 09:12 PM Feb 07, 2025Updated: 09:12 PM Feb 07, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চেনা ছকের বাইরে বেরিয়ে অফবিট স্থানের সৌন্দর্য খুঁজে বের করার খিদে দিনে দিনে বেড়েই চলেছে পর্যটকদের। কর্মক্ষেত্রের চাপ কিংবা সংসারের চাপে হাঁপিয়ে ওঠা মন একটু মুক্ত বাতাসের খোঁজে অস্থির হয়ে ওঠে। ঠিক তখনই টুক করে ব্যাগটা গুছিয়ে অচেনার সন্ধানে পাড়ি দেন ভ্রমণপিপাসুরা। আপনিও ভিড়ে ঠাসা জায়গার বাইরে ঘুরতে চাইলে যেতেই পারেন এই অফবিট ডেস্টিনেশনে।

Advertisement

জুকো ভ্যালি। ছবি: সংগৃহীত

জুকো ভ্যালি
নাগাল্যান্ডের মায়াবী উপত্যকা জুকো ভ্যালি। যেদিকে তাকাবেন বুনো ফুলের মেলা চোখে পড়বে। মরশুমি ফুল, গাছপালা, উঁচু পাহাড়ের সৌন্দর্যে মন হয়ে উঠবে আপন ভোলা। আর যদি থাকে ট্রেকিংয়ের শখ, তাহলে চোখ কান বুজে চলে যান জুকো ভ্যালি। হাত বাড়িয়ে প্রকৃতি আপনাকে স্বাগত জানাবে। পূর্ব ভারতের নাগাল্যান্ড এবং মণিপুর রাজ্যের সীমানা অঞ্চলে এই উপত্যকা। শোনা যায়, এখানে যে ফুল ফোটে, তা দেশের অন্য কোথাও দেখা যায় না। জুকো ভ্যালি যাওয়ার দুটো পয়েন্ট, ভিসামা আর জাখামা। লম্বা, ঘন গাছের সারির মধ্য দিয়ে হাঁটা পথ। পাশাপাশি ২-৩ জন হেঁটে যেতে পারবে। মাঝে মাঝে ম্যাপেল গাছের পাতা সারিবদ্ধ ভাবে রাস্তা দখল করেছে। প্রায় ১ কিলোমিটার মতো খাড়া পথ। তবে শিখড়ে পৌঁছানোর পর সমস্ত ক্লান্তির ছুটি হবেই হবে। চোখের সামনে তখন সাদা মেঘের ভেলা আর নাম না জানা অগুন্তি পাহাড়ের চূড়া।

বেতাব ভ্যালি। ছবি: সংগৃহীত

বেতাব ভ্যালি
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র বেতাব ভ্যালি। এই ভ্যালি হজন উপত্যকা বা হেগেন ভ্যালি নামেও পরিচিত। সানি দেওল এবং অমৃতা সিংয়ের প্রথম ছবি 'বেতাব'-এর নামানুসারে নামকরণ করা হয়। অনন্তনাগ জেলার পহেলগাম থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পাইন বনে ঘেরা এই উপত্যকার মনোরম পরিবেশ আপনাকে হাতছানি দেবেই। মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে লিডার নদী। এছাড়াও নানা প্রজাতির পাখির আবাসস্থল এই উপত্যকা পর্যটকদের কাছে স্বর্গরাজ্য।
ট্রেকিং এবং ক্যাম্পিংয়ের জন্যও এই উপত্যকা জনপ্রিয়। এটিই অমরনাথ যাত্রার প্রবেশদ্বার। বেতাব ভ্যালিতে প্রবেশের মূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা। সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত ঘুরে দেখতে পারবেন। এই ভ্যালির কাছাকাছি দর্শনীয় স্থানগুলি হল চন্দনওয়াড়ি, আরু ভ্যালি এবং লিডার অ্যামিউজমেন্ট পার্ক। এই উপত্যকায় ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস। এই সময় উপত্যকাটি ফুলে ফুলে ভরে ওঠে।

কানহা ন্যাশনাল পার্ক। ছবি: সংগৃহীত

কানহা ন্যাশনাল পার্ক
মধ্যপ্রদেশের বৃহত্তম জাতীয় উদ্যান কানহা ন্যাশনাল পার্ক। বন্যপ্রাণী এবং বাঘ সংরক্ষণের জন্য বিখ্যাত। এখানে শিকারী এবং শিকার উভয়েরই বেড়ে ওঠার মতো বিশাল জায়গা রয়েছে। কানহা তার চিরসবুজ শাল বনের জন্যও ভীষণ পরিচিত। এখানে ৩০০ প্রজাতির পাখি, ৪৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৬ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৫০০ টিরও বেশি প্রজাতির পোকামাকড় রয়েছে। সিংহ, বাঘ, চিতাবাঘ, ঢোল, ভালুক, গৌড় এবং ভারতীয় পাইথন এখানে দেখা যায়। এই রিজার্ভ পরিদর্শনের সেরা সময় ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ জুন। জিপ সাফারি হোক বা হাতির পিঠে চড়ে ঘোরা হোক, কানহা ন্যাশনাল পার্কের প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনাকে এক অনন্য অনুভূতি দেবে। ফটোগ্রাফারদের জন্যও এই জাতীয় উদ্যান অতি আকর্ষণীয় স্থান।

মেঘালয়। ছবি: সংগৃহীত

মেঘালয়
মেঘালয় হল 'মেঘেদের বাড়ি।' এখানে মেঘেরা কানে কানে গল্প করে। মেঘালয় ছবির মতো সুন্দর একটি রাজ্য। জীবনের কিছু রঙিন মুহূর্ত কাটানোর জন্য উপযুক্ত জায়গা এটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়ের দৃঢ়তা আর মনোরম পরিবেশ নিয়ে আজও প্রকৃতি প্রেমিকদের প্রিয় জায়গা এই মেঘালয়। মেঘালয় যাওয়ার উপযুক্ত সময় নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মনোরম পাহাড়, মনোমুগ্ধকর জলপ্রপাত, প্রাকৃতিক গুহা, সুন্দর হ্রদ, ডাউকি নদীর স্ফটিক স্বচ্ছ জল ঘুরে দেখার জন্য শীতকাল হল উপযুক্ত সময়। মেঘালয় গিয়ে আপনি ওয়াড়ি ছোড়া, মাওরিংখাং ব্যাম্বু ট্রেক, লাইটলুম গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, মৌসিনরাম, নংরিয়াত, মনোলিথ পার্ক, কংথং গ্রাম, শিলং, চেরাপুঞ্জি, সোনাংপেডেংয়ের মতো জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। এই সমস্ত জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে কবি অথবা প্রেমিক করেও তুলতে পারে!

জিরো ভ্যালি। ছবি: সংগৃহীত

জিরো ভ্যালি
অরুণাচল প্রদেশের এই উপত্যকার পরতে পরতে সৌন্দর্য। ঘন পাইনের জঙ্গল, বাঁশ বাগানে ঘেরা পাহাড়ি রাস্তা, ধাপে ধাপে ধানের খেত আর আদিবাসীদের জনজীবন নিয়ে জিরো ভ্যালি। দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে এই এলাকা জনপ্রিয় 'জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল'-এর জন্য। প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষে হয় এই উৎসব। পাহাড়ের উপর সবুজের মাঝে এই অনুষ্ঠান পারফর্ম করে স্থানীয় ব্যান্ড। থাকেন আন্তর্জাতিক স্তরের সঙ্গীতশিল্পীরাও। টানা ৪ দিন ধরে চলে গান, হইহুল্লোড়।
সমগ্র উপত্যকা জুড়ে রয়েছে ছোট বড় পাহাড়। যেন সবুজ গালিচায় সাজানো। রয়েছে রডোডেনড্রন, বাঁশ, ফার্ন, পাইনের সমাহার। এই উপত্যকায় রয়েছে ট্যালি ভ্যালি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ৩০০ প্রজাতির পাখি এবং ১৭০ প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে। এখানকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষরা আজও ঐতিহ্য মেনে মুখে উল্কি আঁকেন। জিরো উপত্যকার গ্রামগুলো ঘুরে দেখার পাশাপাশি যেতে পারেন মেঘনা কেভ মন্দির, কিলে পাখো, জিরো পুতো ইত্যাদি জায়গায়। তাই আর দেরি না করে বেরিয়ে পড়ুন। আর উপভোগ করুন প্রকৃতির সৌন্দর্য।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • চেনা ছকের বাইরে বেরিয়ে অফবিট স্থানের সৌন্দর্য খুঁজে বের করার খিদে দিনে দিনে বেড়েই চলেছে পর্যটকদের।
  • কর্মক্ষেত্রের চাপ কিংবা সংসারের চাপে হাঁপিয়ে ওঠা মন একটু মুক্ত বাতাসের খোঁজে অস্থির হয়ে ওঠে।
  • ঠিক তখনই টুক করে ব্যাগটা গুছিয়ে অচেনার সন্ধানে পাড়ি দেন ভ্রমণপিপাসুরা।
Advertisement