স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: সিকিম ও ডুয়ার্সের সর্বনাশে আর যা-ই হোক দার্জিলিং বা মিরিক-কার্শিয়াং সার্কিটের পৌষ মাস এমনটা বলা যাচ্ছে না। কারণ, আতঙ্কে ওইসব এলাকারও বুকিং বাতিলের হিড়িক পড়েছে। আর বঙ্গের প্রিয় শৈল শহরের ম্যালে এখনও যাঁরা আড্ডায়, অথবা রেন কোটে শরীর ঢেকে বাতাসিয়া লুপ অথবা চৌরাস্তায় ঘোরাফেরা করছেন তাঁরা প্রায় সকলেই উত্তরবঙ্গের মানুষ। কলকাতা বা ভিনরাজ্যের পর্যটক তেমন নেই বললেই চলে।
ফাইল ছবি
সিকিমে ধস, বিচ্ছিন্ন রাস্তা, সঙ্গে ডুয়ার্সের জঙ্গল বন্ধের কারণে ওইসব এলাকায় পর্যটনের সর্বনাশ তো হয়েই গিয়েছে। এবার আতঙ্কে কলকাতা অথবা ভিন রাজ্যের পর্যটকরা ১২ জুন থেকে বুকিং বাতিল করতে শুরু করেছেন দার্জিলিং বা কার্শিয়াংয়েরও। যে কারণে ১৬ জুন পর্যন্ত পাহাড়ে সমস্ত হোটেল ও হোম স্টে বুকিং হয়ে গিয়ে থাকলেও মাত্র দুদিনের মধ্যে সবই প্রায় ফাঁকা হয়েছে। কারণ, সিকিমে একের পর এক ভূমিধসে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়া এবং মৃত্যুর খবর। কম তো নয়! মাত্র এক সপ্তাহে নজন প্রাণ হারালেন সেখানে। সম্পত্তির বিরাট ক্ষতি হয়েছে। অনেকটা বিষণ্ণ মনে জানালেন, দার্জিলিংয়ের ‘ক্লাব সাইড ইয়োর অ্যান্ড ট্রাভেল’ সংস্থার সভাপতি পাসাং শেরপা। তিনি বলেন, ‘‘সিকিমে যাতায়াত একরকম অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেখান থেকে পর্যটকরা পড়িমরি পালানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু একের পর এক রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। এদিকে দার্জিলিং পাহাড়ের সমস্ত জঙ্গল রবিবার থেকে বন্ধ হয়েছে। কে আসবে বলুন!’’
[আরও পড়ুন: বিজেপির ভোট বিপর্যয়ে এবার ভাগবতের নিশানায় মোদির ‘প্রিয়পাত্র’ যোগী]
সত্যি আসছেন না। হোটেল মালিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সামান্য পর্যটক পাহাড়ে আছেন ছাতা মাথায় ম্যালের আশপাশে দিন কাটাচ্ছেন। আকাশের মুখভার অবস্থা দেখে বাইরে যাচ্ছেন না। ভিড় কমেছে মিরিক, কালিম্পংয়েও। ধসের ভয়ে বুকিং বাতিলের হিড়িক চলছে। তার উপর রবিবার শিলিগুড়ি-সিকিম ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক পুরোপুরি বন্ধ হতে আতঙ্ক বেড়েছে। সিকিমে যাবেন এমন পর্যটক দূরঅস্ত। যাঁরা সিকিমে মজুরির কাজ করেন তাঁরাও যেতে চাইছেন না। গত বছর লোনার্ক হ্রদ বিপর্যয়ের কথা মুখে ফিরছে তাঁদের।
এর আগে সিকিমের রাস্তা বন্ধ হলে পর্যটকরা দার্জিলিং অথবা কালিম্পং পাহাড়ে ভিড় করতেন। এবার উলটো। সরাসরি বুকিং বাতিল করছেন। কারণ, দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের পরিস্থিতিও সুবিধাজনক নয়। দুই পাহাড়ের যোগাযোগের রাস্তা ধস নেমে বন্ধ হয়েছে পাঁচদিন আগে। কবে খুলবে নিশ্চয়তা নেই। দার্জিলিংয়ের ‘হাইল্যান্ডার টুর অ্যান্ড ট্রাভেলস’ সংস্থার সভাপতি নবীন ছেত্রী বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতির কথা জেনে কেউ ঝুঁকি নেয় বলুন! আমরাও বলছি এলে নিজ দায়িত্বে বেড়াতে হবে।’’