বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: শুরু হয়েছিল পুজোর আগেই। সোমবার সেই ব্যাটলফিল্ড ট্যুরিজমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং গোলে। গাড়ি ও বাইকের কনভয়কে পতাকা দেখিয়ে চো-লা এবং ডোক-লা পাস যুদ্ধক্ষেত্রে পর্যটকদের রোমাঞ্চকর যাত্রার সূচনা করেন তিনি।
সিকিমের পর্যটন বিভাগ সেপ্টেম্বর মাস থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বিভিন্ন বেসামরিক বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে পর্যটকদের জন্য চো-লা এবং ডোক-লা পাস খোলার জন্য কাজ করে চলছিল। ট্রায়াল রানেও পর্যটকদের দল অংশগ্রহণ করে। এরপরই সোমবার সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাটলফিল্ড ট্যুরিজমের উদ্বোধন করেন। এদিন ২৫টি গাড়ি এবং ২৫টি বাইকের কনভয় ভারত-চিন যুদ্ধক্ষেত্র চো-লা এবং ডোক-লা পাসের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মুখ্যমন্ত্রী ফ্ল্যাগ অফ করে পর্যটকদের যাত্রার সূচনা করেন। সিকিম রাজ্য পর্যটন দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, চো-লায় উন্নত পরিকাঠামোর অভাব থাকলেও পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও উন্নতি করা হবে। চো-লা এবং ডোক-লা পাস উদ্বোধনের ফলে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের বিকাশ ঘটবে। সিকিমের পর্যটন শিল্পের সামগ্রিক ছবি পালটে যাবে।
সিকিম পর্যটন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডোক-লা পাস চুম্বি উপত্যকার একটি এলাকা। সিকিম রাজ্যের অধীন উঁচু মালভূমি এবং উপত্যকা। এর উত্তরে রয়েছে চিনের ইয়াদং কাউন্টি, পূবে ভুটানের হা জেলা। চো-লা পাস সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্বতমালার উঁচু পাসগুলির মধ্যে অন্যতম। এটি এভারেস্টের অন্যতম বেস ক্যাম্প। ওই এলাকা বছরের সবসময় বরফ এবং হিমবাহ আবৃত থাকে।
চিন ডোক-লা মালভূমিতে একটি রাস্তা তৈরি করার চেষ্টা করলে ২০১৭ সালের জুন মাসে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ওই এলাকার যেখানে ভারত ও চিনা সেনা মুখোমুখি হয়েছিল। সেখান থেকে শিলিগুড়ি করিডর অর্থাৎ চিকেনস নেকের দূরত্ব একশো কিলোমিটারের কম। ভারত এবং চিনা সেনাবাহিনী ৭৩ দিন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল। শেষপর্যন্ত অচলাবস্থা কাটে। স্বভাবতই ঐতিহাসিক দিক থেকে ডোক-লা পাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে ১৯৬৭ সালের ১ অক্টোবর চো-লা পাসে ভারত ও চিনা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পর্যটকরা এখন দুটি এলাকা ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন।
