ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বাবা বন্ধুর কাছে ঋণ করে ছিলেন। কিন্তু ঋণের টাকা শোধ দিতে পারছিলেন না। আর টাকা না দিতে পারার জন্য দিনের পর দিন নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করল তার বাবার বন্ধু সহ কয়েকজন। এমনই নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুর (Bolpur) থানার সিয়ান-মুলুক এলাকায়। অভিযুক্ত দীপ্তিমান ঘোষকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে বোলপুর থানার পুলিশ। ধৃত ব্যক্তি তৃণমূলের সিয়ান-মুলুক গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। অন্যদিকে, নির্যাতিতা নাবালিকা বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বোলপুর থানার সিয়ান-মুলুক এলাকায় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য দীপ্তিমান ঘোষের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা ঋণ নিয়েছিল এক ব্যক্তি৷ সেই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না৷ অভিযোগ, এই জন্য মেয়েকে ওই নেতার হাতে এক প্রকার তুলে দেয় বাবা। অভিযোগ, ৩১ মার্চ থেকে নাবালিকাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে দীপ্তিমান ঘোষ-সহ আরও দুজন। প্রথমে ৩১ মার্চ ধর্ষণ করার পর নাবালিকা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অভিযুক্ত দীপ্তিমান নাবালিকাকে হুমকি দেয় সে কাউকে এই কথা জানালে তাকে এবং তার পরিবারকে মেরে ফেলা হবে।
পরে নাবালিকা তার এক আত্মীয়কে বাড়ি চলে যায় এবং তাদেরকে সব জানায়। তারা নাবালিকার বাবা, মায়ের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানায় লোকলজ্জার ভয়ে তারা পুলিশে কোন অভিযোগ দায়ের করতে চাই না। গত ২ তারিখে নাবালিকা তার বাড়িতে ফিরে আসে। অভিযোগ, দীপ্তিমান ঘোষ সহ আরও দুজন তাকে আবার ধর্ষণ করে। এর পর নাবালিকার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি নাবালিকাকে তার আত্মীয়রা বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করে।
[আরও পড়ুন: চলতি সপ্তাহেই বৃষ্টিতে ভিজতে পারে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্য, কী বলছে হাওয়া অফিস?]
এই ঘটনায় নির্যাতিতার সম্পর্কের এক দিদি বোলপুর থানায় নাবালিকার বাবা-মা সহ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়েই অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার সুজিত কুমার দে ও বোলপুরের এসডিপিও অভিষেক রায় এর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ নির্যাতিতাকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করে।
অভিযোগের ভিত্তিতে ৩৭৬ ডি (গণধর্ষণ), ৫০৬ (হুমকি), এস সি এণ্ড এস টি এক্স ও পস্কো আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য দীপ্তিমান ঘোষকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ নির্যাতিতার বাবা-সহ বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে । নির্যাতিতার দিদি বলেন, “বোন ফোনে আমাকে সব জানিয়েছে৷ ও ভয়ে রয়েছে। ও সুস্থ হলে ঘটনা আরও পরিষ্কার হবে৷ আমরা চাই অভিযুক্তরা শান্তি পাক।”