সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। গত কয়েক বছর ধরে যিনি ‘দিদির অনুগামী’ হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু রবিবার হঠাৎ ছন্দপতন ঘটল! মেদিনীপুরের মহিষাদলে একটি অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক হাজির হয়েছিলেন আদর্শ বইপ্রেমী ত্রিদিববাবু। যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। এরপরই জল্পনা শুরু হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে শুভেন্দুর (Subhendu Adhikari) দলত্যাগ কার্যত সময়ের অপেক্ষা, যিনি কিনা এদিনই বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দেবেন, সেখানে হঠাৎ তৃণমূল সুপ্রিমোর ‘কাছের মানুষ’ শুভেন্দুর পাশে কি করছেন? তবে কি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে আগেভাগেই ঘর গুছিয়ে রাখছেন তিনি? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বাম আমলে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর অনুগামী ছিলেন ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় (Tridib Kumar Chatterjee)। রাজ্যে সরকার বদলের পরও প্রথমদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিক বিষয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েননি তিনি। তবে সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে শাসক শিবিরের দিকেই ঝোঁকেন। ঘাসফুলকে সমর্থন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বস্ত সৈনিক হয়ে উঠেছিলেন। ত্রিদিব এবং সুধাংশু দে- এই দু’জনই বইমেলার দায়িত্ব সামলাতেন। তাঁদের চোখ দিয়েই বইমেলার দিকে নজর রাখতেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রবিবারের ঘটনার পর সেই রসায়ন অনেকটা পালটে যেতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
[আরও পড়ুন: অনেকটাই সুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, হাসপাতালে শুয়েই রাখছেন দেশ-দুনিয়ার সব খবর]
প্রশ্ন হল, রবিবারের অনুষ্ঠানে আচমকা কেন উপস্থিত হলেন ত্রিদিববাবু? তাঁর শিবিরের তরফে খবর, অরাজনৈতিক সাহিত্যধর্মী এই অনুষ্ঠান তাঁর কথা মতোই সাজানো হয়েছে। আয়োজকদের আমন্ত্রণ রক্ষার্থেই কেবলমাত্র স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন তিনি। এর সঙ্গে ‘রাজনীতি’র কোনও যোগ নেই। যদিও সুধাংশু দে-কে অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি।
এদিকে ত্রিদিববাবুর এই পদক্ষেপে নাকি দারুণ খুশি শুভেন্দু শিবির। পরস্পরের সঙ্গে দেখা হওয়ার সুবাদে কিছু বুদ্ধিজীবীর সঙ্গেও যোগাযোগ স্থাপন হচ্ছে শুভেন্দু শিবিরের। যা ভবিষ্যতে তুরুপের দাস হয়ে উঠতে পারে। অর্থাৎ ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের হঠাৎ ‘শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ’ হয়ে পড়ার বিষয়টি যে তৃণমূলের অন্দরে নতুন করে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee) নাকের নিচেই যেন বই আর রাজনীতি মিলেমিশে গেল।