সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সব জল্পনার অবসান। সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফল হাতে। বাংলায় পদ্ম ফুটলেও, সেই পাঁকে পা পিছলে যায়নি তৃণমূলের তিন তারকা প্রার্থী দেব, নুসরত, মিমির। এতদিন সিনেমাকে সরিয়ে রেখে ভোট পরীক্ষায় মনোনিবেশ করেছিলেন তাঁরা। আজ হাতেনাতে মিলল তার ফলাফল। প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপুল ভোটে হারিয়ে জিতলেন তাঁরা। মোট ৫ তারকা প্রার্থী এবার তৃণমূলের হয়ে লড়েছেন। শতাব্দী রায়, মুনমুন সেন, মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান ও দেব।
ঘাটাল কেন্দ্র থেকে লক্ষাধিক ভোটে বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে হারিয়ে ফের সাংসদ নির্বাচিত হলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেব ওরফে দীপক অধিকারী।ভোটে জিতে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের জন্য দশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন দেব। তিনি বলেন, “কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শুধু ঘাটাল নয়, গোটা দেশের জন্য একথা প্রযোজ্য। এটা মানুষের রায়। আর জনগণের রায়কে আমি সম্মান করি।” নির্বাচনী ফলের আগের দিন, বুধবারও নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় জনগণের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক লড়াই থেকে এগিয়ে রেখেছেন জনগণকে, জনগণের রায়কে। ঘাটালে উত্তপ্ত নির্বাচনী পরিস্থিতেও দেবের গলায় শোনা গিয়েছে সৌজন্যের সুর। রাজনীতি লড়াইয়ের সহজ অস্ত্র ‘কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি’ থেকে শতহস্ত দূরে থেকেছেন। “কোনও কুৎসা নয়, সন্ত্রাস নয়৷ মানুষ যেন সুস্থ, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারেন,” প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে এভাবেই আরজি রাখতে দেখা গিয়েছে ঘাটালের বিদায়ী সাংসদকে। তবে, প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে। দেব যে ভালবাসা দিয়ে টেনে নিয়েছেন ঘাটালের মানুষকে, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
[আরও পড়ুন: সবার উপরে মানুষ সত্য’, ধর্ম নিয়ে ট্রোলের মোক্ষম জবাব দিলেন দেব]
এদিকে যাদবপুর কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও বিজেপির অনুপম হাজরাকে বিপুল ভোটে হারিয়ে জয়ী হলেন রাজনীতিতে নবাগতা মিমি চক্রবর্তী। প্রথমটায় মনে করা হচ্ছিল, যাদবপুর কেন্দ্রে মিমির লড়াইটাই সবচেয়ে কঠিন হবে। কারণ, তিনি রাজনীতির আঙিনায় নতুন। কিন্তু বেলা বাড়তেই বদলেছে ট্রেন্ড। অন্য দুই প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীকে পিছনে ফেলে দিয়ে এক একটা রাউন্ডে এগিয়ে গিয়েছেন মিমি। অবশেষে জয়ের মুখ দেখলেন যাদবপুর কেন্দ্রের মা-মাটি-মানুষ প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী। পাড়ার মেয়ের এহেন জয়ে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত জলপাইগুড়ি পাণ্ডাপাড়ার লোকেরা। জয়ের পর সংশাপত্র হাতে মিমি।
প্রথমবার নির্বাচনে দাঁড়িয়েই বাজিমাত। লক্ষাধিক ভোটে প্রতিদ্বন্দী বিজেপি প্রার্থী সায়ন্তন বসুকে হারিয়ে জয়ী বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী নুসরত জাহান। সবুজ আবির মেখে জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। দুপুর ৩টে ৪২ অবধি খবর ছিল, বসিরহাটে দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন নুসরত জাহান। প্রায় সেই ধারাই অব্যাহত রেখে জয়ের মুখ দেখলেন তিনি। অন্যদিকে, বীরভূম কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে হ্যাটট্রিক করলেন শতাব্দী রায়। বিপুল ভোটে জিতেছেন তিনি৷
[আরও পড়ুন: ‘মানুষকে টাকা দিয়ে কেনা যায় না’, ভারতীকে তোপ দেবের]
অন্যদিকে, আসানসোলের মানচিত্রে গেরুয়া রং ফিকে হয়নি এতটুকুও। প্রতিদ্বন্দ্বী বাবুল সুপ্রিয়র কাছে হেরেছেন মুনমুন সেন। ভোট প্রচারের সময় থেকেই বাবুলকে যথেষ্ট সক্রিয়ভাবে দেখা গিয়েছিল। তৃণমূলের পোস্টার ছেঁড়া থেকে শুরু করে, অনেক ক্ষেত্রেই প্রকাশ্যে তৃণমূল বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু, মুনমুনকে এত সক্রিয়ভাবে চরমপন্থা নিতে দেখা যায়নি। তবে, তাঁর জনপ্রিয়তা বাবুল অপেক্ষা কিছু কম ছিল না। ফলে মনে করা হয়েছিল, লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। কিন্তু বৃহস্পতিবার গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই ধরা পড়েছে অন্যরকম চিত্র। বেলা বাড়তেই ভোট গণনায় পিছিয়ে পড়ছিলেন মুনমুন সেন। তৃণমূলের তিন তারকা প্রার্থী দেব-নুসরত-মিমির পাশাপাশি ঝকঝক করছে দুই বিজেপি তারকা প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় ও বাবুল সুপ্রিয়র রিপোর্ট কার্ড।
The post মমতার মান রাখলেন মিমি-নুসরত, বিপুল ভোটে জয়ী তৃণমূলের নতুন তারকা প্রার্থীরা appeared first on Sangbad Pratidin.