দীপঙ্কর মণ্ডল: মোটা অঙ্কের চাঁদা চেয়ে জুলুম, ক্যাফের মালকিনকে হুমকি, হেনস্তা। একাধিক অভিযোগের জেরে শোরগোল যোধপুর পার্ক (Jodhpur Park)। ঘটনার তদন্তে নেমে এলাকার এক তৃণমূল (TMC) নেতা-সহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃত ‘যোধপুর পার্ক উৎসবে’র অন্যতম উদ্যোক্তা বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার জেরে আপাতত স্থগিত হয়ে গেল ‘যোধপুর পার্ক উৎসব’। ১৯ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই উৎসব হওয়ার কথা ছিল। গোটা বিষয়টি ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা এলাকায়। ক্যাফের মালকিন স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায় লেক থানায় (Lake PS) অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে জানান। শহর কলকাতায় এই ঘটনা তাঁর কাছে একেবারেই অনভিপ্রেত। প্রশাসনের কাছে যথাযথ নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন স্বরলিপি।
ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার রাতে। যোধপুর পার্কের কাছে নামী ক্যাফের মালকিন স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ অনুযায়ী, এলাকার জনা কয়েক তৃণমূল নেতা ক্যাফেতে এসে তাঁর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা চান। তিনি জানান, করোনা কালে ব্যবসার অবস্থা বিশেষ ভাল নয়, তাই চাঁদা দিতে পারবেন না। অভিযোগ একথা শোনার পর ওই নেতারা চাপ দিতে থাকেন। হুমকি দেওয়া হয়, বুধবারের মধ্যে যেন তাঁদের দাবিমতো টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। চেকে সেই চাঁদা নিতে চান তৃণমূল নেতারা। নিজেদের ‘যোধপুর পার্ক উৎসবে’র উদ্যোক্তা বলে পরিচয় দেন বলে অভিযোগ স্বরলিপির।
এরপর বুধবার রাতের দিকে ক্যাফে বন্ধ করে স্বরলিপি ও তাঁর বন্ধুরা বাড়ি ফেরার সময় সেখানে যান সেই তৃণমূল নেতারা। দাবিমতো টাকা হাতে তুলে দিতে বলেন। স্বরলিপি জানান, তাঁর পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এরপরই তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন ওই নেতারা। প্রথমে অসম্মানজনক সম্বোধন করা হয়, এমনকী তাঁরা গাড়ি করে বেরতে চাইলে ওই নেতারা তাঁদের পিছু ধাওয়া করেন। শেষমেশ যাদবপুর থানার কাছে গিয়ে গাড়ি থামিয়ে পুলিশের সাহায্য নিয়ে তাঁরা বাড়ি ফেরেন। এরপর লেক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্বরলিপি। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ বিজয় দত্ত নামে তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার করেন বলে অভিযোগ। পরে গ্রেপ্তার হয় আরও ৪ জন।
[আরও পডুন: ‘আমি সেলিব্রিটি, আর বাদাম বেচব না’, ঘোষণা ‘বাদাম কাকু’ ভুবন বাদ্যকরের!]
ক্যাফের মালকিন স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ”রাতের কলকাতায় কোনও দিন এমন ঘটনা দেখিনি। ওই নেতারা যেভাবে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন, তাতে রীতিমতো ভয় পেয়েছিলাম। আমার ক্যাফের ম্যানেজারও ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। আমি লোকাল কাউন্সিলরকে বলেছিলাম। তিনি কিছুই জানেন না বলে প্রথমে গুরুত্ব দেননি। পরে অবশ্য তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন। আমি প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানাচ্ছি।” এই ঘটনায় তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ”যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের ডেকে পাঠানো হোক। যদি তাঁরা যোধপুর পার্ক উৎসবের উদ্যোক্তা হন, তাও খতিয়ে দেখা হোক। অন্যায় করলে নিরপেক্ষভাবে শাস্তি দেওয়া হবে।”