সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও লোকসভায় পাশ হয়ে গেল সংশোধিত তিন তালাক বিল। তাৎক্ষণিক তিন তালাককে আগেই অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এবার এই প্রথা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। বিলটি আইনে পরিণত হওয়ায় জামিন-অযোগ্য ফৌজদারি অপরাধের তকমা পাবে তিন তালাক প্রথা। অভিযুক্ত স্বামীর শাস্তি হবে তিন বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা। আর স্ত্রী পাবেন ভরনপোষণ। এদিন লোকসভায় বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ। বিলের সংশোধনী নিয়ে তীব্র আপত্তি জানায় কংগ্রেস, বিজেপি-সহ অন্য বিরোধীরা।
কংগ্রেসের অভিযোগ, এই বিলকে মুসলিম পুরুষদের শাস্তি দেওয়ার পন্থা হিসেবে ব্যবহার করছে বিজেপি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপব্যবহার হচ্ছে। বিলটিকে মহিলাদের ক্ষমতায়নে ব্যবহার না করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা চলছে। শেষ পর্যন্ত বিজেপির এক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিল পাশে কোনও অসুবিধা হয়নি। তবে, ভোটাভুটির আগেই ওয়াক আউট করেন কংগ্রেস এবং এআইএডিএমকে সাংসদরা।
[এবার সরাসরি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছাবে টাকা! মোদি-জেটলি বৈঠকে জোর জল্পনা]
বিলটি লোকসভায় এনে এদিন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট গত বছরই তিন তালাক প্রথাকে অসাংবিধানিক বলেছিল। বলেছিল সংসদে সংশ্লিষ্ট বিলটি পাশ করাতে।” আইনমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব। তিনি বলেন, ‘‘সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপব্যাখ্যা করছে। রায়ে কোথাও বলা হয়নি ওই প্রথা দণ্ডনীয় অপরাধ। অন্য কোনও ধর্মে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য শাস্তি পেতে হয় না।” বিরোধীদের মূলত তিনটি দাবি ছিল। প্রথমত, অন্য কোনও ধর্মে বিচ্ছেদের জন্য শাস্তি পেতে হয় না। কংগ্রেসের অভিযোগ এক্ষেত্রে মুসলিমদের টার্গেট করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, বিলটিতে কোথাও বলা নেই, স্বামী শাস্তি পেলে মহিলাদের ভরনপোষণের দায়িত্ব কে নেবে। তৃতীয়ত, এভাবে শাস্তির ব্যবস্থা করলে ভবিষ্যতে আদৌ ওই দম্পতির একসঙ্গে ফিরে আসার আর কোনও সম্ভাবনা থাকবে না।
[সাংবাদিককে প্রকাশ্যে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার হুমকি, বিতর্কে অসমের নেতা]
বিল পাশ করানোর জন্য সরকার যতটা বদ্ধপরিকর ছিল বিরোধীরাও ততটাই অনড় ছিল নিজেদের অবস্থানে। তাঁরা চাইছিলেন বিলটিকে যৌথ সিলেক্ট কমিটিতে পাঠিয়ে দিতে। এই নিয়ে দুই শিবিরের মধ্যে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তীব্র বাদানুবাদ হয়। শেষ পর্যন্ত, কংগ্রেস ও এডিএমকের অনুপস্থিতিতেই বিল পাশ হয়ে যায়। বিল পাশ হওয়ার পরও এ নিয়ে চলছে রাজনৈতিক তরজা। কংগ্রেসের অভিযোগ, এই বিল সংবিধান বিরোধী, মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। অন্যদিকে বিজেপির অভিযোগ, কংগ্রেস ভোটব্যাংকের রাজনীতি করছে।