সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্ষমতা দখল, ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং ক্ষমতাচ্যুত হওয়া – এই তিন পর্যায় রাজনীতিকদের অতি চেনা। রাজনীতিতে এসব ঘুরে ফিরে আসে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ফের ক্ষমতা দখল করা যে বেশ কঠিন, তা ভালই বুঝতে পারেন রাজনীতিবিদরা। তাই তো এত বছর ধরে ত্রিপুরার (Tripura) ক্ষমতায় থাকার পরও জমি যে চিরতরে হারিয়েছে বামেরা, চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল তারই প্রমাণ দেয়। জোট গড়েও হারানো জমি পুনরুদ্ধারে ডাহা ফেল সিপিএম (CPM)। তবে ক্ষমতায় থাকা বিজেপিও কোনওরকমে পাশ করেই ফের ত্রিপুরা দখল করল। আর নাটকীয় উত্থান ঘটল নতুন রাজনৈতিক দল তিপ্রা মথার।
গত সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি এক দফা নির্বাচনে ৮১ শতাংশ ভোট পড়েছিল ত্রিপুরায়। বুথ ফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত ছিল, ঝড় তুলে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে বিজেপি (BJP)। স্পষ্ট হয়েছিল নতুন দল তিপ্রা মথার ভবিষ্যদ্বাণীও। বিজেপি, বাম-কংগ্রেস (Left-Congress) জোটকে পিছনে ফেলে তারা যে ক্ষমতা দখল করতে পারবে না, তা বোঝা গিয়েছিল। তবে দুই প্রধান শিবিরের ভোটব্যাংকে যে থাবা বসাবে তিপ্রা মথার প্রদ্যোৎ বিক্রম মাণিক্যের দল, তেমন অনুমান করেছিলেন নির্বাচনী বিশেষজ্ঞরা।
[আরও পড়ুন: কারও সঙ্গে জোট নয়, লোকসভা নির্বাচনে একাই লড়বে TMC, ঘোষণা মমতার]
বৃহস্পতিবার ফলপ্রকাশের পরও দেখা গেল অনেকটাই মিলে গেল বুথ ফেরত সমীক্ষা। ত্রিপুরার ৬০ টি আসনের মধ্যে ৩৩টিতেই জয়ী বিজেপি। ফের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন ডাঃ মানিক সাহা। বাম-কংগ্রেস জোটের ঝুলিতে এসেছে ১৪টি আসন ও ১৩টি আসনে জয় পেয়েছে তিপ্রা মথা (Tipra Motha)। লড়াইয়ে ভালই বেগ দিয়েছে ত্রিপুরার রাজকুমারের দল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় যে ফলাফল দেখা গিয়েছিল, তারই প্রতিফলন ঘটল ত্রিপুরায়। সেবার বঙ্গে বাম-কংগ্রেস হাত ধরাধরি করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিল। বাংলার ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়েছিল। কিন্তু লাভ হয়নি কিছুই। বড়সড় ব্যবধানে জিতেই দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল।
[আরও পড়ুন: গরু পাচার মামলা: বিপাকে অনুব্রত মণ্ডল, দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরার অনুমতি পেল CBI]
একসময়ে ‘লাল রাজ্য’ বলে পরিচিত ত্রিপুরাকে গেরুয়ামুক্ত করতে ২০২৩ সালে বাম-কংগ্রেস জোট গড়েছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু এতদিনকার হারানো জমি উদ্ধার করতে যে সম্পূর্ণ ব্যর্থ কাস্তে-হাতুড়ি-তারা, তা বোঝাই গেল। এদিকে, তৃণমূলও ত্রিপুরা বিধানসভায় এবার লড়াই করেছে। ৬০টির মধ্যে ২৮ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। বাকি আসনগুলি তারা ছেড়েছিল বিরোধী অর্থাৎ বাম-কংগ্রেসের জন্য। কিন্তু সেই সুযোগও কাজে লাগাতে ব্যর্থ তারা। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। বিকল্প কোনও কিছু না পেয়ে ফের বিজেপিতেই আস্থা রেখেছেন ত্রিপুরাবাসী।