সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তৃণমূলের যুবনেতাদের গ্রেপ্তারিকে কেন্দ্র করে গত রবিবার দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ত্রিপুরা (Tripura)। খোয়াই থানায় কার্যত রণং দেহি মেজাজে ধরা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে রীতিমতো বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। দাবি উঠেছিল ধৃতদের মুক্তির। এমনকী প্রতিবাদ স্বরূপ খোয়াই থানায় অবস্থানে বসে পড়েন অভিষেক-সহ একাধিক তৃণমূল নেতা-নেত্রী। আর তার জেরেই এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল ত্রিপুরা পুলিশ।
জানা গিয়েছে, অভিষেকের পাশাপাশি FIR করা হয়েছে তৃণমূল নেত্রী দোলা সেন, মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং সদ্য শাসক শিবিরে যোগ দেওয়া সুবল ভৌমিকের বিরুদ্ধে। খোয়াই থানায় তৃণমূলের অবস্থানের জেরে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে করা ত্রিপুরা পুলিশের এই মামলাকে কটাক্ষ করেছেন দোলা সেন। তৃণমূল নেত্রীর কথায়, “ত্রিপুরার বিজেপি সরকার তৃণমূলকে ভয় পাচ্ছে। কী আর করবে, ডাকবে আমাদের। তবে ওরা যতই বিচার বিভাগকে কেনার চেষ্টা করুক, আইন বিচারের উপর আমাদের আস্থা আছে।”
এর প্রেক্ষিতে কুণাল ঘোষ টুইটারে লেখেন, “আমরা কোর্ট যেতে বাধা দিইনি। ধৃতদের সেকশন জানতে চেয়েছি। এসকর্ট দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ করছি। আইনজীবী আসা পর্যন্ত সময় চেয়েছি। BJP থানা ঘিরেছিল। আমরাই ওদের নিয়ে কোর্টে বেরিয়েছি। কোর্টে সেদিন পুলিশ এরকম কোনও অভিযোগ করেনি।” এরপরই আরও একটি টুইট করেন তিনি। লেখেন, “আমরা আসল হামলাকারীদের গ্রেপ্তার চেয়েছি। তাদের ছবিও অনেকের কাছে রয়েছে। তার বদলে আক্রান্তরা গ্রেপ্তার। প্রতিবাদীরা গ্রেপ্তার। আইন মেনে ছাড়াতে যাওয়ারা গ্রেপ্তার। ভয় পেয়েছে বিজেপি।”
[আরও পড়ুন: COVID-19: কেন Vaccination Certificate-এ PM Modi’র ছবি? রাজ্যসভায় উত্তর দিল কেন্দ্র]
উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে দলীয় এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার সময় ত্রিপুরায় তৃণমূলের যুবনেতৃত্বকে রাস্তায় আটকানো হয়। সেখানে দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা ও জয়া দত্তদের উপর হামলা চলে বলে অভিযোগ। মাথা ফেটে যায় সুদীপ রাহার, কানে আঘাত পান জয়া দত্ত। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। কার্যত গোটা ত্রিপুরা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এরপরই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হলে খোয়াই থানায় অবস্থানে বসেন অভিষেক, কুণাল ঘোষরা। ধৃতদের মুক্তির দাবি তোলেন। কিন্তু জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হওয়ায় ধৃত নেতাদের তোলা হয় আদালতে। সেই সময়ও থানাতেই বসেছিলেন অভিষেক। সেখান থেকেই নজর রাখছিলেন পরিস্থিতির উপর। দলের নেতারা জামিন পাওয়ার পর ক্ষোভ উগড়ে দেন ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। একইভাবে জয়া দত্ত, দেবাংশু ভট্টাচার্যও ত্রিপুরা সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এভাবে তাঁদের রোখা যাবে না। সেদিন থানায় তৃণমূলের অবস্থানের জেরেই এবার মামলা রুজু করল ত্রিপুরা পুলিশ।