ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ত্রিপুরার (Tripura) প্রতিনিয়ত বদলাতে থাকা রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরও এক নতুন প্রেক্ষাপট। শনিবার সকালে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতির পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দেন পীযুষকান্তি বিশ্বাস। নিজেই সে কথা টুইট করে জানান। এআইসিসি (AICC) খবর পেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। ইস্তফা তুলে নিতে বলে। জানানো হয় রাজ্যে সমস্যা নিয়ে কথা বলতে যাবেন পর্যবেক্ষক অজয় কুমার। তার পর বিকেলেই আবার মত বদলান পীযুষবাবু। পিছিয়ে আসেন পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে।
যদিও এর মধ্যেই জল্পনা, অসমের প্রাক্তন কংগ্রেস (Congress) সাংসদ সুস্মিতা দেবের মতো একইভাবে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন পীযুষবাবু। যদিও টুইটে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই টুইটের জবাব দিয়েছিলেন সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সুস্মিতা। পীযুষবাবুকে তাঁর ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “আপনি কঠিন সময়ে কাজ করেছেন। ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা।” সুস্মিতার এই টুইটই পীযুষকান্তি বিশ্বাসের তৃণমূলে যোগের জল্পনা আরও বাড়িয়ে দেয়। তার পর অবশ্য মত বদল।
[আরও পড়ুন: সোমবার থেকে আর ট্রেনে হকারি নয়, হাওড়া ডিভিশনের নয়া নির্দেশিকায় মাথায় হাত হকারদের]
পেশায় আইনজীবী পীযুষবাবু দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত। সুদীপ রায়বর্মণ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই সে রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তিক্ষয় শুরু হয়। মাঝখানে প্রদ্যোত মাণিক্য দেববর্মণের হাত ধরে কংগ্রেস শক্তিশালী হয়ে উঠছিল। কিন্তু তাঁর দলত্যাগের পর আবার একই অবস্থা। কঠিন সময়েও দলের হাল ধরেছিলেন পীযুষবাবু। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্যে তৃণমূলের উত্থানের ফলে কংগ্রেসের যে সামান্য শক্তি ছিল, সেটাও এখন ক্ষয়িষ্ণু। একে একে নেতাকর্মীরা যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে।
দিন কয়েক আগেই ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতাদের উপর ‘বিজেপির আক্রমণ’কে বর্বর বলে দেগে দিয়েছিলেন পীযুষবাবু। যাকে-তাকে দলে নেওয়া নিয়ে তৃণমূলকে সতর্কও করেছিলেন। একই সঙ্গে জানিয়েছিলেন সে রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে লড়াই হলে, সেই জোটকে তিনি সমর্থন করবেন, স্বাগত জানাবেন। এহেন কংগ্রেস নেতা আচমকা দলত্যাগ করায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল রাজনৈতিক মহলে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের নেতৃত্বের বিভিন্ন স্তরে সমন্বয়ের অভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। এআইসিসি নেতৃত্বকেও সে কথা জানিয়েছিলেন। তবে সেসবকে কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেও ঘনিষ্ঠমহলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন পীযুষবাবু। তার পরেই ইস্তফার সিদ্ধান্ত। যদিও বিকেলে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন তিনি। ফলে এদিন রাতে সমস্ত জল্পনায় জল পড়ে গেল।
[আরও পড়ুন: West Bengal By-Elections: ভোটমুখী ৭ বিধানসভা কার্যত করোনা শূন্য! কমিশনকে জানাবে TMC]