সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এবার ডিগবাজি খেতে শুরু করলেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ছ’মাসের মধ্যেই আর মানিয়ে নিতে পারছেন না দলে। যার হাত ধরে তৃণমূলের টিকিটে জেতা এই সাংসদ বিজেপিতে গিয়েছিলেন তিনিও না কি কোনও কথাই রাখেননি। ফোনও ধরছেন না। দমবন্ধ হওয়া পরিবেশ থেকে যেন মুক্তি পেতে চাইছেন সুনীল মণ্ডল। মঙ্গলবার বর্ধমানের উল্লাস উপনগরীর বাড়িতে বসে ‘বেসুরো’ গাইতে শুরু করেন বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের সাংসদ। এদিন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছেড়ে দেওয়ারও ইচ্ছাপ্রকাশ করেন তিনি। ভবিষ্যৎ ঠিক করতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বিজেপি নেতৃত্ব এবং বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। তৃণমূল আহ্বান জানালে ফিরবেন কি না তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন বলে জানান সুনীলবাবু।
এদিন তিনি বলেন,” অনেকে বলছেন, তৃণমূল থেকে যারা বিজেপিতে এসেছে তারা মানিয়ে নিতে পারছে না। আসলে বিজেপি তাঁদের বিশ্বাস করতে পারছে না। তথাগত রায়, দিলীপ ঘোষরা এদের সম্পর্কে অন্যায় কথা বলছেন। দিলীপ ঘোষ বলেছেন ২০১৯ সালের পর যারা বিজেপিতে এসেছে তাদের আগে বিজেপি হতে হবে। এটা অন্যায় কথা।” তিনি জানান, বড় দল, বড় সংগঠন দেখে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সংগঠনে তাঁরা কোনও গুরুত্বই না কি পাচ্ছেন না তাঁরা। অর্থাৎ মোহভঙ্গ ঘটেছে তাঁদের।
[আরও পড়ুন: দিলীপের উত্তরসূরি ‘বাংলার মেয়ে’? BJP’র অন্দরে নয়া জল্পনা]
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি নিয়ে ভিনরাজ্যের নেতাদেরও কাঠগড়ায় তুলেছেন সুনীল। নাম না করে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেননদের তুলোধোনা করেন তিনি। সুনীল মণ্ডল বলেন, “প্রবাসী নেতাদের কোনও রাজনৈতিক জ্ঞানই নেই। ওদের হিন্দিভাষা আমাদের গ্রামের কেউই বুঝতে পারেননি। মিছিল, রোড শো, জনসভা করে ভোটে জেতা যায় না। বুথস্তর পর্যন্ত সংগঠন প্রয়োজন। সেটাই তো নেই।” তিনি বিধানসভার বর্তমান বিরোধী দলনেতার হত ধরে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। তিনিও না কি এখন তাঁর ফোন ধরছেন না।
বেসুরো সুনীলকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র দেবু টুডু। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের মা। আর যারা ক্ষমতার লোভে মায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, গদ্দারি করে তাদের কোনও ঠাঁই নেই। দলই তা জানিয়ে দিয়েছে। সুনীল মণ্ডলের সাংসদ পদ খারিজের জন্য আমাদের দল ইতিমধ্যেই লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়েছে। তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে দেখে এখন ওরা আবার ক্ষমতার স্বাদ পেতে চাইছে।” বিজেপি অবশ্য মেপে পা ফেলতে চাইছে। দলের জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা প্রবাল রায় বলেন, “সুনীলবাবু কী বলেছেন আমি শুনিনি। তাই না জেনে কিছু বলা ঠিক হবে না।”