সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৫৪ সাল৷ একদিন মেলায় গিয়ে সাইকেল চুরি যায় ছোট্ট ক্যাসিয়াস ক্লের৷ যেই না টের পাওয়া চোরের পিছনে ধাওয়া করে ছোট্ট ছেলেটি৷ কিন্তু চোর ততক্ষণ পগার পার৷ মার্কিন মুলুকের কেন্টাকির লুইসভিগার বাসিন্দা ছেলেটি চোর ধরতে না পেরে শেষমেশ স্থানীয় থানায় যায়৷ অফিসার জো-ই-মার্টিনকে সে বলে, চোরকে ধরে মারতে চায় সে৷ ছোট্ট ক্লের আগ্রাসী মনোভাব নজর কেড়েছিল মার্টিনের৷ তিনি বলেন, মারতে হলে সঠিক পদ্ধতিতে মারা জানতে হবে৷ বক্সিং শিখতে হবে৷ মার্টিনের তত্ত্বাবধানেই শুরু হয় প্রশিক্ষণ৷ সেই ছোট্ট ক্লে-কেই সারা দুনিয়া পরবর্তী কালে চিনেছিল মহম্মদ আলি নামে৷
১৯৬৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি৷ ৩২ বছরের শেতাঙ্গ সোনি লিস্টনকে ধরাশায়ী করেন ২২ বছরের আলি৷ সেই সঙ্গে দুনিয়াকে বার্তা দিয়ে গেলেন, কৃষ্ণাঙ্গরাও শাসন করতে পারেন৷ বাকিটা ইতিহাস৷ সে ইতিহাস যেমন বক্সিংয়ের, তেমন শ্বেতাঙ্গদের দুনিয়াজোড়া প্রভুত্বের বিরুদ্ধে একক সংগ্রামের ইতিহাসও বটে৷ ঠিক যে কারণে নেলসন ম্যান্ডেলাকে ইতিহাস মনে রাখবে, একই কৃতিত্ব কি তাঁর জন্যও বরাদ্দ থাকতে পারে না? কোনও রাজনীতি নেই, কিন্তু ওই এক একটা পাঞ্চেই বোধহয় লেখা ছিল বহুকাল অবহেলিত কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতিবাদ৷ বস্তুত, তাঁর ধর্ম পরিবর্তনও তো কৃষ্ণাঙ্গদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই৷
শনিবার সেই সূবর্ণ যুগের অবসান ঘটল৷ শুধু আমেরিকাই নয়, মহম্মদ আলির মৃত্যুতে শোকাহত গোটা বিশ্ব৷ শুধু ক্রীড়াজগতই নয়, তাঁর প্রয়াণে শ্রদ্ধা জানিয়েছে রাজনীতি, বিনোদনজগতের ব্যক্তিত্বরাও৷ শাহিদ আফ্রিদি থেকে গ্যারেথ বেল, অমিতাভ বচ্চন থেকে সাব্বির আলি, সকলেই শোকাহত৷
শচীন তেণ্ডুলকর টুইট করেছেন, মহম্মদ আলি আমার ছোটবেলার হিরো৷ ইচ্ছা ছিল একদিন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে৷ কিন্তু তা আর কোনওদিন হবে না৷ দ্য গ্রেটেস্ট-এর আত্মার শান্তি কামনা করি৷
মাস্টার ব্লাস্টারের না হলেও আলির সঙ্গে দেখা করার সৌভাগ্য হয়েছিল বিগ বি-র৷ সেই ছবিই এদিন টুইটারে পোস্ট করেছেন অমিতাভ বচ্চন৷
কলকাতাতেও পা পড়েছিল এই কিংবদন্তির৷ মহামেডান ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি সুলেমান খুরশিদ বলছেন, “ব্যক্তিগত আমন্ত্রণে একবার এখানে এসেছিলেন তিনি৷ কিছু ট্রিকও শিখিয়েছিলেন৷ সবসময় ভাবতাম, কীভাবে হাওয়ায় ভেসে থাকেন তিনি৷ সেই রহস্য ফাঁস করেছিলেন৷” প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার সাব্বির আলি বলেন, “কারও সঙ্গে তুলনা করতে চাই না৷ কিন্তু তিনি ছিলেন এক্কেবারে অন্য৷ খুব শান্তভাবে কথা বললেন৷ আমি ভাগ্যবান যে ওঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে৷” মনিপুরি বক্সার মেরি কম বলেন, “ভাবলেই খারাপ লাগছে যে তিনি আর নেই৷ বক্সিংয়ে তাঁর বিপুল অবদান রয়েছে৷ বক্সাররা তাঁকে দেখে অনুপ্রেরণা পান৷ আমাদের মনের মধ্যে তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন৷”
The post “দ্য গ্রেটেস্ট”কে শ্রদ্ধা শচীন, অমিতাভের appeared first on Sangbad Pratidin.