অর্ণব আইচ: ডিমে হাত দিলেই ছ্যাঁকা লাগছে মধ্যবিত্তের। ১৩ টাকা পেরিয়ে ১৪ টাকা জোড়ার কমে পোলট্রির ডিমও বেচতে নারাজ দোকানিরা। বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদেরও ডিম কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। সেখানে হেস্টিংস থেকে শুরু করে খিদিরপুরের কয়েকটি দোকানে কম দামে ডিম (Eggs) বিক্রি করছে দুই তরুণ! খবর পেয়ে একটু অবাক হয়েছিলেন পুলিশ আধিকারিকরা। ব্যাপারটা খোলসা হয়েছিল হেস্টিংস থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর।
কলকাতায় (Kolkata)ডিম চুরির অভিযোগ। প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার টাকার ডিম চুরির অভিযোগে তদন্ত করে দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করল হেস্টিংস থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম রাজবীর ভট্টাচার্য ও ইন্দ্রপ্রসাদ ভুঁইয়া। তাদের গ্রেপ্তারির পর ডিম উদ্ধারে নামলেন পুলিশ আধিকারিকরা। রবিবার দুই তরুণকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে সরকারি আইনজীবী জানান, ডিম উদ্ধার করার জন্যই ধৃতদের জেরার প্রয়োজন। তাদের ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে (PC) রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
কিন্তু তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, বেশ কয়েকটি ডিম নিজেরাই খেয়ে ফেলেছে অভিযুক্তরা। বাকি ডিমগুলি দোকান থেকে কিনেছেন খদ্দেররা। তাঁরাও উদরপূর্তি করেছেন সেই ডিম দিয়ে। এবার না খাওয়া ডিমের সন্ধানে ধৃতদের নিয়ে দোকানে দোকানে হানা দিচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। অভিযুক্ত ওই দুই তরুণ এর আগেও ডিম চুরি করেছে কি না, সেই তথ্যও তাদের জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে।
[আরও পড়ুন: ‘স্বামী বিবেকানন্দর পুনর্জন্ম হয়েছে মোদি রূপে’, রাহুল সিনহার মন্তব্যে বিতর্ক, তীব্র কটাক্ষ কুণালের]
পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি ভিনরাজ্য থেকে ডিমের বাক্স ও কার্টন বোঝাই একটি মালবাহী গাড়ি চালক ও খালাসি নিয়ে আসেন হেস্টিংসের মোড়ে। তখন গভীর রাত। ভোরের মধ্যেই ওয়াটগঞ্জের এক ব্যবসায়ীর হাতে ওই ডিম পৌঁছে দেওয়ার কথা। তার আগে হেস্টিংসের মোড়ের কাছে গাড়িটি রেখে একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলেন তাঁরা। এর মধ্যে সুযোগ বুঝে হানা দেয় রাজবীর ও ইন্দ্রপ্রসাদ। অভিযোগ, খিদিরপুরের বাসিন্দা ওই দুই তরুণই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে ‘বখাটে’ হিসাবে এলাকায় পরিচিত। গাড়ি থেকে একের পর এক ডিমের বাক্স নামিয়ে এনে রীতিমতো ‘রিলে’ পদ্ধতিতে সেগুলি পাচার করে দেয় তারা। তার সঙ্গে চালকের আসন থেকে চুরি করে একটি মোবাইল ও পরিচয়পত্র। তাদের দেখে চালক তাড়া করতেই তারা পালিয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবসে প্রথমবার প্রধান অতিথির আসনে মিশরের প্রেসিডেন্ট]
ততক্ষণে চুরি হয়ে গিয়েছে ১৩ বাক্স ডিম। এই ব্যাপারে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এলাকার সিসিটিভির ফুটেজে (CCTV Footage) দু’জনের ছবি ধরা পড়ে। এ ছাড়াও এলাকার ব্যবসায়ীরাও পুলিশকে জানান যে, শীতকালে এমনিতেই ডিমের দাম চড়ে। বিশেষ করে বড়দিনের আগে কেক তৈরির জন্য ডিমের চাহিদা হয় অপরিসীম। সেখানে সস্তায় দোকানে দোকানে ডিমের বাক্স বিক্রি করতে শুরু করেছে দু’জন। আবার সস্তায় পাওয়ার লোভে অনেকেই কিনছেন সেই ডিম। সেই সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করতে শুরু করে। রাজবীর ও ইন্দ্রপ্রসাদকে শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া পরিচয়পত্র ও মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু কীভাবে ডিম উদ্ধার হবে, তা নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছে পুলিশ।