অর্ণব আইচ: কলকাতার (Kolkata)একটি নামী পাঁচতারা হোটেলের অধিকর্তা পরিচয় দিয়ে এবার সাইবার জালিয়াতদের ‘সিম সোয়াপিং’! এই পদ্ধতিতেই ওই হোটেল কর্তার ৭০ লক্ষ টাকা জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তদন্ত করে দিল্লি (Delhi) থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। বুধবার অনিল কুমার ও দীপেশ কুমার নামে দু’জনকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়।
পুলিশ জানিয়েছে, জালিয়াতরা দিল্লিতে বসেই প্রথমে ওই পাঁচতারা হোটেলের অধিকর্তার সই জাল করে তাঁর লেটারহেডে চিঠি লিখে মোবাইল ফোন সংস্থায় যায়। নিজেদের ওই হোটেলের কর্তার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দিয়ে জানায়, হোটেল কর্তার মোবাইল ও সিম কার্ড (Sim Card) চুরি হয়ে গিয়েছে। তাই তাঁর নতুন সিমকার্ডের প্রয়োজন। তার সঙ্গে কিছু ভুয়া নথিও মেল করে পাঠায় তারা। যে মেল আইডি ব্যবহার করে, সেটিও ওই হোটেলকর্তার ভুয়ো মেল। ওই ভুয়ো (Fake)নথি হাতে পাওয়ার পর মোবাইল সংস্থাটি কোনও যাচাই না করেই জালিয়াতদের হাতে সিমকার্ড তুলে দেয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর চলতি সিম কার্ড বন্ধ করে দিয়ে নতুন সিমকার্ড চালু করে দেয় মোবাইল সংস্থা। নতুন সিমকার্ড চালু হতেই সেটির মাধ্যমে জালিয়াতরা জেনে নেয়, তাঁর কোন কোন অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে।
[আরও পড়ুন: প্রার্থী হতে চান না অভিষেকের ‘পঞ্চায়েতের মুখ’ কেশপুরের শেখ হোসিনুদ্দিন]
ভুবনেশ্বরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৭০ লক্ষ টাকা কলকাতার মিন্টো পার্কের কাছে একটি বেসরকারি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কয়েক দফায় লেনদেন করা হয়। এর পর ওই অ্যাকাউন্ট থেকে অনিল কুমারের একটি অ্যাকাউন্টে ৬৯ লক্ষ টাকা যায়। যেহেতু হোটেলকর্তার সিমকার্ড অকেজো হয়ে গিয়েছে, তাই তাঁর মোবাইলে কোনও মেসেজ আসেনি। তাই তিনি বুঝতেও পারেননি যে সাইবার জালিয়াতদের ফাঁদে পড়েছেন। এর মধ্যেই বিহারের (Bihar) বেগুসরাইয়ের একটি জায়গা থেকে ওই পুরো টাকা তুলে নেওয়া হয়। হোটেল কর্তা তাঁর লোক মারফৎ ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সময় জানতে পারেন যে, তাঁর কয়েকটি অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে মোট ৭০ লক্ষ টাকা। তিনি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁকে বিষয়টি জানায়। তিনি শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
[আরও পড়ুন: কালিয়াগঞ্জে নাবালিকা ‘ধর্ষণ ও খুন’ মামলায় SIT গঠনে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ হাই কোর্টের]
তারই ভিত্তিতে লালবাজারের গোয়েন্দারা তদন্ত শুরু করেন। যেহেতু অনিল কুমারের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়েছে, দিল্লিতে তার সন্ধানে চালানো হয় তল্লাশি। তাকে গ্রেপ্তার করেই দীনেশ কুমারের নাম উঠে আসে। দিল্লিতে দীনেশের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েই হদিশ মেলে সিমকার্ড, চেক ও ব্যাঙ্কের নথিপত্রের। দু’জনকে জেরা করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।