অর্ণব আইচ: এবার উত্তরবঙ্গেও ঘাঁটি তৈরি করল জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)। রায়গঞ্জকে ভিত্তি করে জেএমবি তৈরি করল নতুন ইটাহার মডিউল। এ ছাড়াও মুর্শিদাবাদের লালগোলায় আরও একটি মডিউল তৈরি করার কাজ শুরু করেছে জেএমবি। এই দু’টি নতুন মডিউল তৈরি করার ক্ষেত্রে বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জেএমবির শীর্ষনেতা বা ‘আমির’ ইজাজ আহমেদকে। ইজাজকে এই কাজে সাহায্য করেছিল আবদুল বারি ও উত্তর দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদের আরও কয়েকজন জেএমবি নেতা। লালবাজারে ইজাজকে জেরা করে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।
[আরও পড়ুন: বুদ্ধ মন্দির উড়িয়ে দেওয়ার ছক কষেছিল ইজাজ, জেরায় স্বীকার জেএমবি প্রধানের]
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত আমিরকে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান মডিউল ভেঙে যাওয়ার পরও ভেঙে পড়েনি জেএমবি। বোমারু মিজান ওরফে কওসর জেলে যাওয়ার পরও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে তারা। প্রথমে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে জঙ্গি নেতা ইজাজ। জেরার মুখে প্রথমে পুলিশের কাছে দাবি করেছিল যে, ২০১৬ সালের পর থেকে তার সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ নেই। কিন্তু তার মোবাইলের সূত্র ধরে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, সে অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছে মুর্শিদাবাদ ও উত্তর দিনাজপুরের আবদুল বারি-সহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে। সেই সূত্র ধরেই গোয়েন্দারা ইজাজকে জেরা করার পর স্বীকার করে সে। গোয়েন্দাদের জানায়, নতুন করে মাথা তুলতে একসঙ্গে উত্তর দিনাজপুরে ইটাহার মডিউল ও মুর্শিদাবাদে লালগোলা মডিউল তৈরি করছে জেএমবি। এর মূলে রয়েছে আন্তর্জাতিক জেএমবি নেতা সালাউদ্দিন সালেহিন।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এর আগে জেএমবি অসমে একাধিক মডিউল তৈরি করলেও উত্তরবঙ্গে করেনি। এমনকী, মালদহ দিয়ে বাংলাদেশে যাতায়াত করলেও তার ওই জেলায়ও মডিউল তৈরি করেনি। এবার উত্তরবঙ্গেও মাথা গলাল জেএমবি। জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, ইসলামপুর, ইটাহার থেকে শুরু করে দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহের বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা জঙ্গি সদস্য নিয়োগ করতে শুরু করেছে। এই মডিউলে তারা ঝাড়খণ্ডের কিছু যুবককেও নিয়ে এসেছে। কারণ হিসাবে ইজাজ জানিয়েছে, মালদহ থেকে শুরু করে ইটাহার, ইসলামপুরের বহু তরুণ ও যুবককে মগজধোলাই করে জঙ্গি সদস্য তৈরি করা সহজ। কিছু যুবককে তারা ‘দাওয়াত’ দিতেও শুরু করেছে। যেহেতু হিলি সীমান্ত বেশি দূরে নয়, তাই বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি নেতাদের যাতায়াত ও বাংলাদেশে প্রশিক্ষণের জন্য সদস্যদের পাঠানো যায়। যেহেতু মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় আগেই জেএমবির ঘাঁটি ছিল, তাই নতুন করে লালগোলায় মডিউল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় জঙ্গিরা। তারা কতজন যুবকের মগজধোলাই করেছে, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
The post ইটাহার ও লালগোলায় জেএমবির নয়া মডিউল! ইজাজকে জেরায় মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য appeared first on Sangbad Pratidin.